আমাদের ভারত, ২২ ফেব্রুয়ারি: কোনভাবেই সন্ত্রাসবাদের হিতৈষী যাতে না হয়ে ওঠে বাংলাদেশ, ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশকে স্পষ্ট ভাষায় এই বার্তা দিয়েছে ভারত। হাসিনা সরকারের পতনের পর মহম্মদ ইউনুসের আমলে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা ব্যাপক ভাবে বেড়েছে। পাকিস্তানের পরামর্শে সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো অপারেশন বা সার্ককে পুনরুদ্ধার করতে ভারতের কাছে আর্জি জানিয়েছিল বাংলাদেশ। তার প্রেক্ষিতে এই কড়া বার্তা দিয়েছে ভারত।
আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এই আট সদস্য দেশের সমষ্টিতে ১৮৮৫ সালে তৈরি হয়েছিল সার্ক। যার লক্ষ্য ছিল এই দেশগুলোর আভ্যন্তরীণ সহযোগিতা শান্তি উন্নতির লক্ষ্যে একে অপরের সহযোগিতা করা। কিন্তু পাকিস্তান লাগাতার সন্ত্রাস ও ২০১৬ সালে উড়ি হামলার পর ভারত সার্ককে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। এবার পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে সেই সার্ককে পুনরুদ্ধার করতে উঠে পড়ে লেগেছে বাংলাদেশ।
গত সপ্তাহে ওমানের মাসকটে ইন্ডিয়ান ওশেন কনফারেন্সে ভারতের বিদেশ মন্ত্রী জয় শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক হয় বাংলাদেশের বৈদেশিক উপদেষ্টা তাওহিদ হোসেনের। সেখানে সার্কের বৈঠক ডাকার জন্য নয়া দিল্লির কাছে সাহায্য চায় ঢাকা। বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্য কোনো মন্তব্য করেননি জয় শংকর। তবে সেখানে যে এই প্রস্তাব বাংলাদেশ রেখেছিল তা শুক্রবার স্পষ্ট করেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রাণবীর জয়সওয়াল।
তিনি বলেন, মাসকট- এর বৈঠককে সার্ককে পুনরোজ্জীবিত করার প্রস্তাব ভারতের কাছে রেখেছিল বাংলাদেশ। পুরো দক্ষিণ এশিয়া জানে সার্ক বাতিল করার নেপথ্যে কারা। সার্কের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে কোন দেশের কুকর্ম। আমাদের বিদেশ মন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ যেন সন্ত্রাসবাদের হিতৈষণা না করে। ভারতের বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট, আভ্যন্তরীণ সহযোগিতা ও শান্তির জন্য যা অবশ্যক ভাবে জরুরি তা হলো সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া।
শেখ হাসিনা বিদায়ের পর থেকে অরাজকতা চরম আকার নিয়েছে বাংলাদেশে। মৌলবাদীদের নৃশংস হামলার মুখে পড়েছে সেখানকার সংখ্যালঘুরা। এই ঘটনায় ভারত- বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝে পাকিস্তান প্রেম ব্যাপকভাবে জেগে উঠেছে বাংলাদেশের। বহু বছর ধরে দু’দেশের মধ্যে বন্ধ থাকা বাণিজ্য শুরু হয়েছে নতুন করে। অভিযোগ, সন্ত্রাসকে ইন্ধন দিতে পাকিস্তান থেকে আনা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র। মাথাচাড়া দিচ্ছে বাংলাদেশে বহু নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন। এসব কিছুর মাঝেই বাংলাদেশকে কড়া বার্তা দিল ভারত।