আমাদের ভারত ২৭ সেপ্টেম্বর: আর জি কর আবহেই বাংলায় নারী সুরক্ষা নিয়ে আবারও বড় প্রশ্ন উঠেছে। গান পয়েন্টে রেখে এক আইএএস অফিসারের স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আবার তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঘটনায় অপরাধীদের বাঁচাতে তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপির আইটি সেলের আহ্বায়ক অমিত মালব্য নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। অন্যদিকে শনিবার নয়া দিল্লিতে দলের সর্ব ভারতীয় মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদী এই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সাংবাদিক বৈঠকে।
আইএএস অফিসারের স্ত্রীর ধর্ষণের চেষ্টার মামলাকে লঘু করে দেখানোর অপরাধে শুক্রবার হাইকোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে রাজ্য পুলিশ। ওই প্রসঙ্গ টেনে অমিত মালব্য দাবি করেছেন, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং বাংলায় নারীর প্রতি যৌন অপরাধের প্রবণতা ক্রমবর্ধমান। সন্দেশখালি থেকে আরজিকরের প্রসঙ্গ টেনে ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতনের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মানবতার কলঙ্ক বলে কটাক্ষ করেছেন। অমিত মালব্য লিখেছেন, বন্দুকের নলের সামনে দুদিন ধর্ষণের শিকার হন একজন আইএএসের স্ত্রী। ওই মহিলা থানায় গেলে পুলিশ অপরাধীকে বাঁচাতে তথ্য প্রমাণ নষ্ট ও লোপাট করার চেষ্টা করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে এভাবে মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত। তিনি প্রশ্ন করেন, যদি কলকাতায় একজন প্রভাবশালী আইএএস অফিসারের স্ত্রী যৌন নিপীড়নের শিকার হন এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অপরাধের চিহ্ন মুছে ফেলার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে, তাহলে দরিদ্র প্রান্তিকরা কতটা দুর্বল তা কল্পনা করা যায়?
গত ১৫ জুলাই লেক থানা এলাকায় এক আইএএসের স্ত্রীকে দুদিন ধরে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ফাঁকা বাড়িতে একা পেয়ে তিনি ধর্ষণ করেন। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে পরে অভিযোগ জানাতে থানায় গেলে পুলিশ ধর্ষণের পরিবর্তে লঘু ধারায় মামলার রুজু করে বলে অভিযোগ। এমনকি মহিলার বয়ানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটি বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। যে কারণে গ্রেফতারের পরদিনেই অভিযুক্ত আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায়।
শুক্রবার এই মামলায় অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনারদের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। অবিলম্বে সেই অভিযুক্তকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অমিত মালব্যের সুরে সুর মিলিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদীও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁর কথায় পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি এমন যে ওখানে পুলিশ ও সরকার অপরাধীদের কাছে বন্দি হয়ে বসে আছে। ঘটনার সময় থানার সিসিটিভি ফুটেজ নেই, কেন পুরুষ আধিকারীক ঘটনার বিবরণ নিয়েছেন? ১৪ ও ১৫ জুলাই ধর্ষণ হয়েছিল এবং কুড়ি আগস্ট মেডিক্যাল এক্সামিনেশন হয়। এই সবকিছু থেকে স্পষ্ট তথ্য প্রমাণ নষ্ট করা এবং লোপাট করার চেষ্টা হয়েছে। সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, সন্দেশ খালি, আরজি কর- এর পর এই ঘটনা প্রমাণ করে পশ্চিমবাংলা মহিলাদের জন্য কতট ভয়াবহ হয়ে গেছে। এখানে অপরাধী পুলিশ এবং সরকারের মধ্যে দূরভিসন্ধি রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা সুধাংশু ত্রিবেদী।