আমাদের ভারত, ১ ডিসেম্বর: বাংলাদেশ জ্বলছে। লাগাতার চলছে হিন্দুদের উপর হামলা। অশান্ত বাংলাদেশে এবার হেনস্তার মুখে হিন্দু মহিলা সাংবাদিক। অফিস থেকে বেরতে ঢাকার কারওয়ান বাজারে তাকে লোকে একেবারে ঘিরে ফেলে বলে অভিযোগ। নানাভাবে তাকে অপমান, কটুক্তি ও ভয় দেখানো হয়। পরে সেখান থেকে তাকে নিয়ে যায় পুলিশ। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
ঘটনা সম্পর্কে উল্লেখ করে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লিখেছেন, এটা মানবাধিকার লঙ্ঘণের আরও একটি উদাহরণ। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশ থেকে আরও একটি উদ্বেগজনক খবর পাওয়া গেছে। শুধুমাত্র হিন্দু সন্ন্যাসী এবং ভক্তরাই নয়, এমনকি মুন্নি সাহার মতো হিন্দু মহিলা সাংবাদিকরাও ইসলামপন্থী মৌলবাদীদের দ্বারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই ধরনের ঘটনা কর্ম স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার উপর একটি গুরুতর আক্রমণ। আন্তর্জাতিক স্তরে এই ঘটনা সম্পর্কে খবর ছড়িয়ে পড়া দরকার।” তাঁর দাবি, এটা মানবাধিকারের প্রশ্ন।
প্রথমে শোনা যায় সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কিন্তু তাকে গ্রেফতারের খবর অস্বীকার করে পুলিশ। বরং পুলিশের দাবি তাকে নিরাপত্তার জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশের মহিলা সাংবাদিক মুন্নি সাহাকে গ্রেফতারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। বাংলাদেশের একাধিক সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, শনিবার রাতে অফিস থেকে বেরনোর পরেই ঢাকার কারওয়ান বাজারে মহিলা হিন্দু সাংবাদিককে ঘিরে ধরেছিল একদল লোক। সে খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরবর্তীতে সাংবাদিককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের তরফে দাবি করা হলেও তাকে শর্ত সাপেক্ষে ছাড়া হয়েছে বলে জানাগেছে।
এই মহিলা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চারটি মামলা আছে। এমনকি একটি মামলায় তো বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি মুন্নিরও নাম আছে।
মুনি আপাতত একটি অনলাইন পোর্টালের সম্পাদক। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কাজ করেছেন সে। এখন একটি অনলাইন পোর্টলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে শনিবার রাতে দাবি করা হয়, মুন্নিকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে পুলিশ। তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দপ্তরে।
যদিও পরে রাতের দিকে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, মুন্নিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী ঢাকা মহানগর পুলিশের অ্যাডিশনাল কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক দাবি করেছেন, মুন্নিকে গ্রেফতার বা আটক কোনটাই করা হয়নি। শনিবার রাত দশটা নাগাদ তিনি কারওয়ান বাজারের জনতা টাওয়ার থেকে বের হন। পরে মহিলা সাংবাদিকের ঘিরে ধরে কয়েকজন ব্যক্তি, যারা স্থানীয় বাসিন্দা বলে দাবি করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অ্যাডিশনাল কমিশনার জানিয়েছে, ওই ঘটনায় প্রবল আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মহিলা সাংবাদিক। সেই পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তেজগাঁও থানার পুলিশ। উদ্ধার করা হয় তাকে আর সুরক্ষার স্বার্থে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অ্যাডিশনাল কমিশনার।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঢাকা মহানগর পুলিশে মুন্নির নামে যে চারটি মামলা রুজু আছে সেই মামলাগুলিতে জামিন নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে তবেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।