Himant, BJP, পাক প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি উড়িয়ে ভূগোল পড়ালেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা, চিন ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ দিলে ভারতের অসুবিধা নয়, সুবিধাই হবে

আমাদের ভারত, ৩ জুন: পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের আবহে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত রেখেছে ভারত। আর তাতে নাস্তানাবুদ ইসলামাবাদের তরফে একের পর এক হুঁশিয়ারির শোনা গেছে। এবার তাদের নয়া হুঁশিয়ারি, চিন যদি একই পথে হেঁটে ব্রহ্মপুত্রের জল আটকে দেয়, অর্থাৎ ঘুরপথে ভারতকে ভয় দেখানোর চেষ্টা। আজ তার উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত
বিশ্বশর্মা। পাক প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি উড়িয়ে ভূগোলের পাঠ পড়িয়েছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তাঁর দাবি, চিন ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ দিলে ভারতের অসুবিধা নয়, সুবিধাই হবে।

এই প্রসঙ্গে হিমন্ত দাবি করেছেন, কল্পনার বশবর্তী হয়ে পাকিস্তান কাহিনী বুনতে শুরু করেছে। ভারত যেমন পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিতের ঘোষণা করেছে। একই ভাবে যদি চিন ব্রহ্মপুত্রের জল আটকে দেয় তাহলে কী করবে দিল্লি? সম্প্রতি এই মর্মে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের ঘনিষ্ট নাইহুসান আফজাল। আর তা নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় আফজালকে কড়া জবাব দিয়েছেন হিমন্ত। আফজালের দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে হিমন্ত লিখেছেন, ভারতের সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করার কাহিনী তৈরি করেছে পাকিস্তান। চিন ভারতের ব্রহ্মপুত্রের জল দেওয়া বন্ধ করলে কি হবে? তথ্য সহ তা ব্যাখ্যা করছি। তাঁর কথায়, স্বচ্ছতার মাধ্যমে ভুল ধারণা ভাঙতে হবে। তিনি জানান, ব্রহ্মপুত্রের বৃদ্ধি হয়েছে ভারতে, সংকোচন নয়। ব্রহ্মপুত্রের মোট জলস্রোতের ৩০- ৩৫ শতাংশ চিনের নিয়ন্ত্রণে, হিমবাহের গলন ও তীব্বতের সামান্য বৃষ্টি। কিন্তু জলস্রোতের বাকি ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ভারতেই। অরুণাচল, অসম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়ের মৌসুমী বৃষ্টিতে হৎউ, সুভানশিরি, লোহিত, কামেং, মানস, ধানসিড়ি, জিয়া ভরালির মতো উপনদীর দৌলতে ব্রক্ষ্মপুত্র জলে ভরে থাকে। খাসি, গাড়ো, জয়ন্তিয়া পাহাড়ের কৃষ্ণা, গারো কলসির মতো নদীর বাড়তি জল বয়ে আনে ব্রহ্মপুত্র।

চুটিংয়ে ভারত- চীন সীমান্তে ব্রহ্মপুত্রের জলস্রোত ২ হাজার থেকে ৩ হাজার কিউবিক মিটার প্রতি সেকেন্ডে। আর অসমের সমতল গুয়াহাটিতে তা ফুলে ফেঁপে ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার। ব্রহ্মপুত্রের উজানের উপর ভারত নির্ভরশীল নয়। ব্রহ্মপুত্র ভারতের বৃষ্টি নির্ভর নদী ব্যবস্থার মধ্যে পড়ে। সেটি ভারতীয় ভূ- খণ্ডে প্রবেশের পরই শক্তিশালী হয়েছে। এই সত্যটা পাকিস্তানের জানা দরকার। আর চিন যদি জলের স্রোত বন্ধ করার কথা ভাবে (যদিও চীন এমন কোন কথা বলেনি) তাতে ভারত উপকৃতই হবে। প্রতিবছর বন্যা হবে না অসমে। যাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘর ছাড়া হন। জীবন জীবিকা নষ্ট হয় প্রতিবছর।

অন্যদিকে পাকিস্তান ৭৪ বছর ধরে সিন্ধু জলচক্তির সুবিধা নিয়ে এসেছে। এখন ভারত নিজে সার্বভৌমি ক্ষমতা দাবি করায় তারা আতঙ্কিত। ওদের মনে করিয়ে দিই ব্রহ্মপুত্রকে কোনো এক পক্ষ নিয়ন্ত্রণ করে না। আমাদের ভূগোল, বর্ষা এবং সভ্যতা তাকে নিয়ন্ত্রণ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *