আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ২৫ মে: সভাপতি পদ হারিয়েছেন কয়েকদিন আগেই। তবুও কেষ্টময় বীরভূমের রামপুরহাটের মহামিছিল। অনুব্রত মণ্ডলের বড় বড় কাটআউট দেখে মনে হচ্ছিল অনুব্রত মণ্ডলের (কেষ্ট) ডাকেই মহামিছিল। পোস্টার ব্যানারে দ্বন্দ্ব তো রয়েছেই। দ্বন্দ্ব ছিল হুডখোলা গাড়িতে চড়া নিয়েও। এমনকি মিছিল শেষে মঞ্চে না উঠে সোজা বোলপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন অনুব্রত মণ্ডল।
পদ যাওয়ার আগে নলহাটিতে দলের মহকুমা স্তরের সভা ডেকে রামপুরহাট, সিউড়ি এবং বোলপুর শহরে মহা মিছিলের ডাক দেন অনুব্রত মণ্ডল। কোর কমিটিকে উপেক্ষা করেই ওই মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে বলে দলের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। সেই ক্ষোভ পৌঁছে যায় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কানে। এরপরেই অনুব্রত মণ্ডলের সভাপতি পদ অবলুপ্ত করা হয়। রামপুরহাটের বিধায়ক তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুনরায় চেয়ারপার্সন করে কোর কমিটির দায়িত্ব তাঁর হাতেই তুলে দেয় রাজ্য নেতৃত্ব। চেয়ারপার্সন হয়ে তড়িঘড়ি কোর কমিটির সভা ডেকে কেষ্টর কর্মসূচিকেই মান্যতা দেওয়া হয়। সেই মতো রবিবার বিকেলে রামপুরহাট শহরে ছিল মহামিছিল। রামপুরহাট দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে মিছিল বিক্ষিপ্ত ভাবে হয়।
আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় মিছিলে হাঁটলেও অনুব্রত মণ্ডল, কাজল শেখ হুডখোলা গাড়িতে মিছিলে ঘোরেন। আগে আগে চলে অনুব্রত মণ্ডলের গাড়ি। সেই গাড়িতে ছিলেন সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, লাভপুরের বিধায়ক রানা সিং। পিছনে কাজলের গাড়িতে ছিলেন সাংসদ শতাব্দী রায়, অসিত মাল। মিছিলের সামনে দলীয় কর্মীরা কেষ্টর নেতৃত্বে লড়াই করার স্লোগান দেন। মিছিলের সামনে পিছনে কেষ্টর বড় বড় কাট আউট দেখে মনে হচ্ছিল কোর কমিটি নয়, এখনও বীরভূমে দল চলছে অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বেই। মিছিলে আশিসবাবু কেষ্টকে মঞ্চে ওঠার আবেদন করলেও তাতে কর্ণপাত করেননি তিনি। সোজা দলীয় কার্যালয় হয়ে চলে যান বোলপুর। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি মহকুমার পাঁচ বিধায়ক, ব্লক সভাপতিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এরপরেই কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনারাই দলের সম্পদ। আপনারা যেভাবে আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এসেছেন তার জন্য ধন্যবাদ জানাই।”
এদিকে অনুব্রত মণ্ডল যখন বেরিয়ে যাচ্ছেন তখন মঞ্চে চেয়ারপার্সন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। মাইকে ডাক দিলেও মঞ্চে অনুব্রত না আসা প্রসঙ্গে আশিসবাবু বলেন, “প্রচুর মানুষ এসেছিলেন। মানুষের চাপে তিনি আসতে পারেননি। তবে মিছিল আমাদের সর্বাত্মক।”
শুধু মিছিল নয়, দ্বন্দ্ব ব্যানার, কাট আউত নিয়েও। রাত থেকে রামপুরহাট শহরে কোর কমিটির পক্ষ থেকে যে ব্যানার ঝোলানো হয় সেখানে কোর কমিটির সদস্যদের ছবি ছিল। কিন্তু আইএনটিটিইউসির পক্ষ থেকে অনুব্রত মণ্ডলের কাট আউটে শহর ছেয়ে দেওয়া হয়েছিল। কর্মী সমর্থকদের উৎসাহ, উদ্দীপনা এদিনের মিছিলের কৃতিত্ব যে অনুব্রত মণ্ডলের পক্ষেই গিয়েছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাক্ষে না।