আমাদের ভারত, ২৯ সেপ্টেম্বর: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোষেই তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হলো বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি দাবি করেছেন, “দোষ করেছেন হাসিনা, আর মার খাচ্ছে হিন্দুরা, যেহেতু ভাবা হয় তারা আওয়ামী লীগের সমর্থক।” রবিবার তিনি সামাজিক মাধ্যমে এ ব্যাপারে তাঁর মতামত ব্যাখ্যা করেন।
তসলিমা লিখেছেন, “হাসিনার দোষেই হাসিনার এই পরিণতি। দলের হোমড়াচোমড়াদের অবাধে দেশের সম্পদ লুঠ করতে দিয়েছেন। আত্মীয়স্বজনকে দিয়েছেন যত ইচ্ছে চুরি করতে। তাঁর আদর পাওয়া এক একটা পাতি সাংবাদিকও শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। মোল্লা তোষণের রাজনীতি করে দেশের সর্বনাশ করেছেন।
নারীবিদ্বেষী, হিন্দুবিদ্বেষী বদমাশ, ধর্মব্যবসায়ীদের স্বাধীনতা দিয়েছেন, ওয়াজ করে করে মানুষের মগজ ধোলাই করার। কচুরিপানার মতো গড়ে তুলেছেন মসজিদ, মাদ্রাসা। জামাত শিবিরকে দলে টেনেছেন। বিএনপি জিতে যাবে এই ভয়ে নির্বাচন দেননি, গণতন্ত্রের বারোটা বাজিয়েছেন।
হাসিনার দোষেই দেশের এই করুণ পরিণতি। নিজের আর ক্ষতি কত করেছেন, দেশের ক্ষতি করেছেন সবচেয়ে বেশি। তাঁর অতি চালাকি বা নির্বুদ্ধিতা বা কেয়ারলেসনেসের জন্য আজ দেশ দখল করেছে জামাত শিবির আর হিজবুত তাহরীর সহ সব রকম জিহাদি দল।
সচিবালয় থেকে শুরু করে সমস্ত সরকারি অফিস আদালতে, সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, এমনকী পুলিশ বাহিনীতেও অবৈধভাবে কোনও রকম বিজ্ঞপ্তি, পরীক্ষা, প্রশিক্ষণ ছাড়াই জামাত শিবিরের লোক ঢোকানো হয়ে গেছে, সেনাবাহিনীতেও জামাত গিজগিজ করছে। এরা হাসিনা যতটা ধ্বংস করেছেন দেশ, তার চেয়েও লক্ষগুণ বেশি করবে। অলরেডি তার আলামত পাওয়া গেছে।
হাসিনার দলের কারা মার খাচ্ছে এখন? কারা জামাত শিবিরের রোষের শিকার হচ্ছে? যারা দেশের সম্পদ লুঠ করেনি, যাদের কোনও সুযোগ সুবিধে জোটেনি, যারা সত্যিকারের আত্মত্যাগী সদস্য। কারও জন্য কি হাসিনার এত টুকু মায়া হয়? হয়েছিল কখনও? একেবারেই না। মসজিদ, মাদ্রাসা বানিয়ে মোল্লাতুষ্টিতে ব্যস্ত ছিলেন। পেয়ারের লোকদের লুটপাটের সুযোগ দেওয়ায় ব্যস্ত ছিলেন, প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করায় ব্যস্ত ছিলেন, মিডিয়াকে কব্জা করা, মুক্তচিন্তকদের নির্মূল করায় ব্যস্ত ছিলেন।”