Google Doodle, Hamida Banu, গুগুল ডুডলে শ্রদ্ধা ভারতের প্রথম মহিলা কুস্তিগীর হামিদা বানুকে

আমাদের ভারত, ৪ মে: ভারতের প্রথম মহিলা কুস্তিগীর ছিলেন হামিদা বানু। ৭০ বছর আগে এই দিনে তিনি মাত্র ১ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডে বিখ্যাত কুস্তিগীর বাবা পাহলওয়ানকে পরাজিত করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও প্রশংসা লাভ করেন। শনিবার গুগল ডুডল হামিদা বানুকে স্মরণ করেছে।

‘গল্প হলেও সত্যি’ এই কাহিনি থেকে অবশ্যই বোঝা যায়, হামিদা বানু নেহাত যে সে কুস্তিগির ছিলেন না। বিশ শতকের প্রথম দিকে আলিগড়ের এক মুসলিম পরিবারে তাঁর জন্ম। বাড়িতে কুস্তির চল ছিল, আর ছোটবেলা থেকেই ছেলেদের সঙ্গে কুস্তি লড়ে হামিদা বড় হয়েছিলেন। ১৯৩৭ সালে প্রথম পেশাদারি কুস্তির মঞ্চে নামেন হামিদা।

দিল্লিতে কয়েকজন পুরুষ কুস্তিগিরকে হারানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর নাম ক্রমশ দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। হামিদা আরও বেশি করে খ্যাতির আলোয় আসেন লাহোরের বিখ্যাত কুস্তিগির ফিরোজ খানের মুখোমুখি হয়ে। ১৯৫৪ সালের ৪ মে বরোদায় আশ্চর্য এক লড়াই দেখতে শহরের মানুষ সে দিন উপচে পড়ে শহরের এক বিখ্যাত কুস্তির আখড়ায়। যে দুজন কুস্তি লড়বেন তাদের একজন হলেন স্বনামধন্য বাবা পেহলওয়ান। শুধু যে দৈত্যের মতো চেহারা তা নয়, কুস্তির প্যাঁচের কেরামতিতেও বাবা অসামান্য।

তাঁর খ্যাতি এমনটাই, যে কেউ কখনও বিশ্বাসই করে না যে তিনি হারতে পারেন। কিন্তু বরোদার সে লড়াই বস্তুতই আশ্চর্যজনক। বাবা পেহলওয়ানকে লড়তে হবে এক মহিলার বিরুদ্ধে, হামিদা বানু। লড়াইয়ের শর্তটাও অদ্ভুত। হামিদা বানু যদি হেরে যান তা হলে তাঁকে বাবা পেহলওয়ানকে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে হবে। আর বাবা পেহলওয়ানও ঘোষণা করেছেন– এ লড়াইয়ে তিনি যদি হেরে যান তা হলে জীবনে আর কখনও কুস্তিই লড়বেন না।

নিজের জয় সম্পর্কে একশো শতাংশ নিশ্চিত ছিলেন বাবা পেহলওয়ান। এক মহিলা তাঁকে কুস্তিতে হারাবে– এ কখনও সম্ভব? কিন্তু তিনি জানতেন না, বরোদার এই লড়াইয়ের কিছু দিন আগেই পরপর দু’জন পাণিপ্রার্থী কুস্তিগিরকে হেলায় হারিয়েছেন হামিদা বানু। তাঁদের একজন শিখ, আর একজন কলকাতার এক হিন্দু পালোয়ান।

সে সব খবর না জানায়, হামিদা বানুর বিরুদ্ধে কুস্তি লড়াটা নিতান্তই ছেলেখেলা হিসেবে নিয়েছিলেন বাবা পেহলওয়ান। তার ফলও ভুগতে হল তাঁকে। কুস্তি চলল মাত্র এক মিনিট চৌত্রিশ সেকেন্ড– শুরু হতে না হতেই শেষ! কুস্তির প্যাঁচে ল্যাজে গোবরে হয়ে বাবা পেহলওয়ান মাটি নিলেন। শর্তানুযায়ী, সেই তাঁর শেষ কুস্তি লড়া।

বাবা পাহলওয়ান তাঁর কর্মজীবনে ৩২০ টিরও বেশি ম্যাচ জিতে কুস্তি জগতে প্রবাদপ্রতীম ভাবমূর্তি তৈরি করেছিলেন। হামিদার কাছে হেরে তিনি পেশাদার কুস্তি থেকে অবসর নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *