বিজেপিতে যোগ দিতেই দলীয় কর্মীরা কুশপুতুল পোড়ালো আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন সাংসদ দশরথ তিরকের

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ১৯ ডিসেম্বর: প্রাক্তন সাংসদ দশরথ তিরকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতেই ক্ষোভ ছড়াল আলিপুরদুয়ারে বিজেপি নেতা ও কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। রীতিমতো জুতোর মালা পরিয়ে, দশরথ তিরকের কুশপুত্তলিকা নিয়ে কুমারগ্রাম এলাকার বিভিন্ন জনপদে ঘুরে বেড়াল বিজেপি কর্মীরা। শেষে সেই কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। দশরথের দিকে ক্ষোভ জানিয়ে ওঠে স্লোগান।

শনিবার বিকেলের পর থেকেই কুমারগ্রাম বারবিশা, কামাক্ষাগুড়ির মত জনপদগুলিতে চলে বিক্ষোভ প্রদর্শন। গোটা ঘটনার পরিপেক্ষিতে বিজেপির জেলা নেতদের একাংশ নিজেদের চাপা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করেছেন। স্বয়ং বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গা প্রসাদ শর্মা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “আমি আমার সমর্থকদের পাসেই আছি।” সংবাদ মাধ্যমের একাংশকে গঙ্গাপ্রসাদ এও বলেন, জেলার বাইরে গিয়ে যারা আমাদের না জানিয়ে দলে এসেছেন তাদের জেলার বাইরেই রাজনীতি করতে হবে।”

উল্লেখ্য, কুমারগ্রাম কেন্দ্র থেকেই বাম আমলে পর পর দু’বার আরএসপির প্রতীকে বিধায়ক নির্বাচিত হন দশরথ তিরকে। রাজ্যে পালাবদলের পর ২০১৩ সালে তৃণমূল কংগ্রেসে পা রাখেন এই বাম নেতা। এরপরেই ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে আলিপুরদুয়ারের সাংসদ নির্বাচত হন। যদিও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে রাজ্যের শাসক দলের প্রার্থী হলেও বিজেপি প্রার্থী জন বারলার কাছে পরাজিত হন দশরথ তিরকে। এদিকে এদিন অমিত শাহর সভায় আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান দশরথ তিরকে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে আসতেই তার বিজেপিতে যোগদানের বিরোধিতায় তুমুল বিক্ষোভ আছড়ে পড়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে। আদিবাসী নেতার কুশপুতুলে জুতোর মালা পরিয়ে কুমারগ্রাম ও বারবিশার পথে নামেন কয়েকশো বিজেপি কর্মী সমর্থক। বিক্ষোভ শেষে দাহ করা হয় দশরথের কুশপুতুল।

একটি মহলের মতে বিজেপির কেন্দ্র ও রাজ্য নেতাদের সঙ্গে গোপনে আলাপ আলোচনা করেই বিজেপিতে যাবার সিদ্ধান্ত নেন দশরথ। জেলা নেতাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা তিনি করেননি।এদিকে এদিনের বিক্ষোভ মিছিল থেকে বারবার স্লোগান উঠতে শোনা যায় ‘পচা আলু দশরথ তিরকেকে মানছি না মানবো না’।

যদিও বিজেপিতে যোগদান সেরে দশরথ তিরকে জানিয়েছেন,”বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও রাজ্য নেতৃত্বের সবুজ সংকেত পেয়েই দলে যোগদান করেছি। কারণ ব্যক্তিতন্ত্রের আবহে তৃণমূলে দম আটকে আসছিল। সাময়িক বিক্ষোভ ধীরে ধীরে ঠিকই স্তিমিত হয়ে যাবে। সবাই একত্রিত হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করবো।”

তবে দলে দশরথকে স্বাগত জানাচ্ছেন কিনা এবং নির্বাচনের টিকিট পেতেই কি তাঁর দলবদল? এই দুটি প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মেলেনি বিজেপি নেতাদের থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *