সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৮ ফেব্রুয়ারি: আলুর প্রতি কুইন্টাল ১৩০০ টাকা সহায়ক মূল্য নির্ধারণ সহ একাধিক দাবিতে বাঁকুড়ায় রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলনে নামল কৃষকদের সংগঠন।চাষিদের কাছ থেকে ৯০০ টাকার পরিবর্তে ১৩০০ টাকা কুইন্টাল দরে আলু কেনা, ১০০ দিনের কাজ সুনিশ্চিত করা এবং চালের দর কমানো-সহ বিভিন্ন দাবিতে আজ সারা বাঁকুড়াজুড়ে রাস্তা অবরোধ করে সংযুক্ত কৃষক মোর্চা। পুয়াবাগানে বাঁকুড়া- পুরুলিয়া ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান প্রাদেশিক কৃষক সভার সদস্যরা। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে চলা এই অবরোধের জেরে ব্যাপক যানজট তৈরি হয় এলাকায়। এই অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জেলার আলুচাষিদের অভিযোগ, বর্তমানে যা অবস্থা তাতে চাষের খরচটুকুও উঠছে না। চাষিরা আলুর সঠিক দাম পাচ্ছেন না। তারা আর্থিক ভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ। আলুচাষ করে ঋণের বোঝা তাদের মাথায় চেপে বসেছে, অথচ বছরের বেশিরভাগ সময় ৩০ থেকে ৪০ টাকা কিলো দরে আলু কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে আলু চাষি থেকে সাধারণ মানুষ সকলকে রেহাই দিতে হবে। এরজন্য দীর্ঘদিন ধরেই ১৩০০ টাকা প্রতি কুইন্টাল সহায়ক মূল্যে আলু কেনার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে বিভিন্ন কৃষক সংগঠন। রাজ্যের প্রতিটি কৃষক বাজারগুলিতে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা ও ক্রমবর্ধমান চালের দর কমানোর দাবিও জানানো হয়ে আসছিল। এই দাবিকে সামনে রেখে শুক্রবার আন্দোলন শুরু করে সংযুক্ত কৃষক মোর্চা। পুয়াবাগান ছাড়াও জেলার জয়পুর ব্লকের চাতরা মোড়, হীড়বাঁধ ব্লকের হাতিরামপুর মোড়, নিকুঞ্জপুর হাটতলা ও গঙ্গাজলঘাঁটি ব্লকের দুর্লভপুর মোড়েও একই দাবিতে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় কৃষক সংগঠনের সদস্যরা।
জেলায় এবার বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন চাষিরা। কখনও ডিভিসির ছাড়া জলে, আবার কখনও অকাল বৃষ্টিতে ডুবেছে জমির ফসল। এতে মাঠেই ধরেছে ফসলের পচন। এমনকি অতি কুয়াশায় আলু সহ ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এতেই উঠেছে ক্ষতিপূরণের দাবি। যদিও চাষিদের অবস্থার কথা বিবেচনা করে সম্প্রতি কুইন্টাল প্রতি আলুর সহায়ক মূল্য ৯০০ টাকা করার ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, এতে সন্তুষ্ট নন জেলার চাষিরা।