আমাদের ভারত, ২৯ জুন: তার পক্ষে বুথে গিয়ে ভোট দেওয়া সম্ভব নয়, তাই বাড়িতে বসে মোবাইলে ভোট দিলেন বিভাদেবী। তিনি কেবল বিহারের প্রথম মহিলা ভোটার নন, দেশের প্রথম মহিলা ই- ভোটার। ভারতের নির্বাচনের ইতিহাসে এটা একটা বিপ্লব বললে ভুল বলা হবে না।
শনিবার বিহারের তিনটি জেলার ছয়টি পৌরসভার ৪৫টি আসনে উপনির্বাচন ছিল। আর সেখানেই রাজ্য তো বটেই এমন কী বিদেশ থেকেও নথিভুক্ত ভোটাররা ভোট দিতে পেরেছেন। ঘরে বসে ১৩ হাজারের বেশি ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভোট হয়। পাটনা সহ ছয়টি পুরসভায় ভোট হয়েছে। ভোট গণনা হবে ৩০ জুন। বিহারের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ডক্টর দীপক প্রসাদ জানান, দেশে প্রথম বিহারে ই- ভোটিং ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এর প্রধান উদ্দেশ্য ভোটের হার বৃদ্ধি করা।
অনেক সময় প্রৌঢ়রা বয়সজনিত কারণে ভোট দিতে যেতে পারেন না, প্রবাসী ভোটাররা দূর থেকে ভোটাধিকার প্রয়োগে বঞ্চিত হন, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের পক্ষে বুথে গিয়ে ভোট দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না, একই রকম ভাবে বিশেষভাবে সক্ষম ভোটাররাও ভোটদান থেকে বঞ্চিত হন। কঠিন রোগে আক্রান্ত কোনো ভোটার শারীরিক কারণে ভোট দিতে যেতে পারেন না। এইসব ক্ষেত্রে তারা যাতে বাড়িতে বসে মোবাইলে সহজে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তাই ই- ভোটিং- এর ব্যবস্থা।
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন, ই- ভোটিংয়ের জন্য দুটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এই দুটি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ নিরাপদ। ই- ভোটিংয়ের অ্যাপে একবার ভোট দেওয়া হয়ে গেলেই তা লক হয়ে যাবে। শুধু ভোট গণনার দিন ফের খোলা হবে। এই দুটি অ্যাপ, ভোটিং এস ই সি বিএইচ আর এবং এস ই সি বি আই এইচ আর।
৪০ বছরের বেশি বয়স্ক প্রবীণ নাগরিক, বিশেষভাবে সক্ষম ভোটার, গুরুতর রোগে অসুস্থ ভোটার, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা পরিযায়ী শ্রমিক বা বিদেশ থেকে স্বীকৃত ভোটার এই ভোটিং অ্যাপের মাধ্যমে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলার বিভাদেবী প্রথম মহিলা ই- ভোটার। অন্যদিকে মুন্না কুমার প্রথম পুরুষ ই- ভোটার। মোট ভোটারেরর ৬৭ শতাংশ ই- ভোটিং ব্যবস্থায় মোবাইলে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
বিহারের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, পুরসভার উপনির্বাচনে ১৬ হাজার ৭৮৮ জন মহিলা, ১৬ হাজার ৯৫১ জন পুরুষ ভোটার মোবাইলে ই-ভোটিং করবেন বলে আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে ৩১ হাজার ২৩৮ জন ভোটারকে এই ব্যবস্থায় ভোট দেওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচনা করা হয়েছে।
ভোটদানের এই ব্যবস্থাকে নির্বাচনী বিপ্লব বলে আখ্যা দিয়েছেন ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট ডক্টর বিদ্যানন্দ সিং। প্রায় তেরো হাজার ভোটার বাড়িতে বসে মোবাইল ফোনে ভোট দিয়েছেন বলে আশা করছেন তারা।