সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৭ ডিসেম্বর: কারখানায় স্থানীয় কর্মীদের নিয়োগের দাবিতে কারখানার গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখানোকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের হাট আশুরিয়ায়।বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, “আমাদের অপরাধ আমরা বিজেপি করি, তাই আমাদের কাজ করার অধিকার নেই। আমরা খেয়ে পরে বেঁচে থাকি তা শাসক তৃণমূল চায় না। তাই বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দা হয়েও কাজ চাইতে এলে আমাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়।” আজ সকালে বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের হাট-আশুড়িয়ার একটি ফেরো অ্যালয় কারখানার সামনে এভাবেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন সীতা বাগদী সহ এক ঝাঁক নারী পুরুষ।
এদিন বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার কনভেনর স্বরূপ ঘোষ হাট-আশুড়িয়ার “মাইথন ফেরাস প্রাইভেট লিমিটেড” নামক একটি ফেরো অ্যালয় কারখানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তিনি তাদের দলের সমর্থক ও কর্মীদের ঠিকা শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করার দাবি জানান। সেই সময় কিছু কর্মরত শ্রমিক কাজ বন্ধ করে দাবি করেন তাদের কাজ বন্ধ করতে হুমকি দিচ্ছে বিজেপির লোকেরা। যার ফলে উত্তেজনা চরমে ওঠে।
এপ্রসঙ্গে স্বরূপ ঘোষ বলেন, আমরা গত দু’বছরে ১২টি ডেপুটেশন দিয়ে স্থানীয়দের কাজের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু বারবার প্রতিশ্রুতিই দিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। আর বাইরে থেকে লোক এনে নিয়োগ হচ্ছে। ফের এদিন আমরা কাজ চাইতে এসেছি। উল্টে কর্তৃপক্ষের লোকজন আমাদের হুমকি দিয়ে পুলিশকে বলছে কারখানায় ঢুকে বিজেপি দাদাগিরি করছে, ধমক দিচ্ছে কর্মরত শ্রমিকদের। শাসক দলের উস্কানিতেই এই মিথ্যা অপপ্রচার করার সাহস পাচ্ছে একশ্রেণির লোক।
স্বরূপ ঘোষ বলেন, বিষ্ণুপুর লোকসভা আসনে পরাজিত হওয়ার পর তৃণমূল এভাবেই বিজেপি সমর্থকদের উপর বদলা নিতে প্রশাসনের সহযোগিতায় কারখানার মালিকদের সঙ্গে অশুভ আঁতাত করেছে। এ নিয়ে এদিন কারখানা চত্বরে উত্তেজনা দেখা দেয়।
এবিষয়ে বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলক মুখার্জি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলে উদ্যোগপতিরা আসছেন। কারখানা গড়ছেন। স্থানীয়রা কাজ পাচ্ছে। কিন্তু বিজেপির কিছু উঠতি মস্তান বাধা দিচ্ছে। এখানের কারখানাগুলিতে বিজেপি, তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস এভাবে বিচার করে নিয়োগ হয় না। স্থানীয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হিসাবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নিয়োগ হয়। কোনো রং দেখা হয় না।
কারখানার জেনারেল ম্যানেজার জিৎ দাঁ বলেন,বিজেপির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তারা কারখানায় ঢুকে বারবার আমাদের থ্রেট করছে লোক নেওয়ার জন্য। অথচ এই কারখানায় ৯০ শতাংশের বেশি লোক স্থানীয়। তাঁর দাবি, এদিন জোর করে কারখানার ফার্নেস বন্ধ করানোর দাবি করেন বিজেপি নেতারা। শ্রমিকরা কাজ বন্ধ না করায় গালিগালাজ দিতে থাকেন। এর ফলে প্রায় দু’ঘণ্টা কাজ বন্ধ রাখতে হয়।