পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ১৮ মার্চ: ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের হরিপুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু’দিনের শতবর্ষ উদযাপন উৎসবের সূচনা হলো সোমবার সকালে। এদিন সকালে মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগে বিভিন্ন মনীষি ও বিপ্লবীর সাজ, ধামসা, মাদল, রণপা, মুখোশ নৃত্য, কলসি মাথায় নৃত্য, এনসিসি প্যারেড সহযোগে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হরিপুরা সহ আরও তিনটি তিনটি গ্রামের সীমানা পরিক্রমা করে। শোভাযাত্রা শেষে সমবেত অতিথিদের দ্বারা বিদ্যালয়ের শতবর্ষ তোরণ উদ্ঘাটন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শতবর্ষ স্মারক পতাকা উত্তোলন ও একশত প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্যে দিয়ে শতবর্ষ অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
সূচনা পর্বেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বিদ্যালয়ের প্রাণপুরুষ কালীচরণ পালোই, পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শহিদ ক্ষুদিরাম বসু’র আবক্ষ মূর্তির আবরণ উন্মোচন হয়। প্রাণপুরুষ কালীচরণ পালোই- এর মূর্তির আভরণ উন্মোচন করেন ভূমিদাতা পরিবারের সদস্য গোলোকবিহারী পালোই। মনীষীদের মূর্তি গুলি উন্মোচন করেন উপস্থিত অতিথিরা। শতবর্ষ উদযাপন উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ঝাড়গ্রাম জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শক্তিভূষণ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রারম্ভিক পর্বের পর মূল অনুষ্ঠান মঞ্চে তাঁর স্বাগত ভাষণে উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি বিদ্যালয় গড়ে তোলার ইতিহাস সংক্ষেপে আলোচনা করেন শতবর্ষ উদযাপন কমিটির সভাপতি নিত্যানন্দ পালোই। তিনি তাঁর বক্তব্যে বিদ্যালয়ের অগ্রগতির পথে বিদ্যালয়ের প্রাণপুরুষ কালীচরণ পালোই- এর অবদান বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ডিআই তথা বিশিষ্ট লোকসংস্কৃতি গবেষক ড: মধুপ দে, ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের দলনেতা কমলাকান্ত রাউৎ, জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধক্ষ্য সুমন সাহু, সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ঝুনু বেরা, অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক রঞ্জিত সোরেন, রোহিনী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌরাঙ্গ ঘোষ, শিক্ষানুরাগী সর্বেশ্বর মহাপাত্র, অরুণ গিরি, প্রদীপ কুমার মাইতি, সুদীপ কুমার খাঁড়া, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শতবর্ষ উদযাপন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তথা হরিপুরা প্রাথমিক ও উচ্চ-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই প্রধান শিক্ষক যথাক্রমে সুতীপ প্রামাণিক ও সঞ্জয় কুমার ঘোড়াই, শতবর্ষ উদযাপন কমিটির সম্পাদক গোলক বিহারী পালোই, বিদ্যালয়ের সভাপতি গৌরচন্দ্র বারিক সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা। অতিথিদের উপস্থিতিতে প্রকাশিত হয় শতবর্ষ স্মারক পত্রিকা ‘পরশমণি’।
সারাদিন ধরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপিত করেন বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা। অনুষ্ঠিত হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।ভূমিদাতা পরিবারের সদস্যদের ও মূর্তিদাতাদের বিশেষ ভাবে সম্মানিত করা হয়। বিকেলে শিক্ষা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের শিল্পীরা ও অন্যান্য আমন্ত্রিত শিল্পীরা নাটক সহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপিত করেন।