আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৬ এপ্রিল: “যে মুখ্যমন্ত্রী সংবিধানের শপথ নিয়ে দেশের কথা ভাবেন না, শুধু ব্যক্তি স্বার্থের কথা ভাবেন তাঁর সম্পর্কে জবাব দেওয়ার কোনো ভাষা নেই। তিনি বিভিন্ন সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আক্রমণের প্ররোচনা দিয়ে এসেছেন। তারপরেই চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালি, এরপর শনিবার এনআইএকে আক্রন্ত হতে হচ্ছে”। শনিবার প্রচারে বেরিয়ে এভাবেই মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করলেন বীরভূম লোকসভার বিজেপি প্রার্থী, প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধর।
এদিন তিনি সকালে পৌঁছে যান নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের কুরুমগ্রামে। সেখানে এদিন রক্ষাকালী মায়ের বিশেষ পুজো ছিল, ফলে সেখানে কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হয়। মন্দিরে মা কালীকে প্রণাম করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন নলহাটির বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা অনিল সিং। মুখোমুখি হয়ে দু’জনেই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। অনিলবাবুর দাবি, প্রার্থী তাকে প্রচারে নামার অনুরোধ করেন। আমরাও জানিয়ে দিয়েছি বহিস্কার প্রত্যাহার হলেই মাঠে নামবেন তারা।
সেখান থেকে দেবাশিসবাবু চলে যান নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের শীতলগ্রামে। সেখানে পায়ে হেঁটে প্রচার করেন। শিব মন্দিরে প্রণাম করেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রাক্তন আইপিএস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর প্ররোচনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা থেকে কেন্দ্রীয় সুরক্ষা বাহিনীকে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। যারা জাতীয় সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় কাজ করে চলেছেন, যারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদকে দমন করে চলেছেন, এদিন তাদের আক্রান্ত হতে হয়েছে। এই মুখ্যমন্ত্রী দেশের আগে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা ভাবেন”।
প্রতিপক্ষ তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায় প্রসঙ্গে বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধর বলেন, “আমি চাকরি ছেড়ে রাজনীতি করতে এসেছি। প্রধানমন্ত্রীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতিতে এসেছি। এক সঙ্গে দুই দিক দেখবো এতো হতে পারে না। আমি অভিনয়ও করব, আবার রাজনীতিও করব, হতে পারে না। তাই তো গ্রামে গ্রামে ঘুরে এতো না পাওয়ার অভিযোগ আমাদের শুনতে হচ্ছে। আর উনি শুধু বলছেন তাকে দেখার জন্য ভোট দাও। আমরা বলছি এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ভোট দিন। শুধুমাত্র সংসদের সভা ছাড়া সর্বক্ষণ আমাকে আপনারা পাবেন। আমি তাই চাকরি ছেড়ে দিয়ে রাজনীতিতে এসেছি। মনে করলে এখনও ১৭ বছর চাকরি করতে পারতাম, কিন্তু মোদীজিকে দেখে চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে এসেছি”।
শীতলকুচিতে সংখ্যালঘু মৃত্যু নিয়ে দেবাশিসবাবু বলেন, “উনি শীতলকুচি নিয়ে বলছেন, আর বগটুই গ্রামে ১০ জনকে জতুগৃহের মতো পুড়িয়ে মারা হল। সেটা নিয়ে উনার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। তাই আমি প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে এসেছি। সেই ঢেউ মুখ্যমন্ত্রীর কানে ধাক্কা মারছে। আমার মনে হয় এ রকম মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই”।