আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ১২ ডিসেম্বর: বাংলা থেকে অপশক্তিদের তাড়াতে, ২০২১ এর বিধানসভায় আলিপুরদুয়ার জেলার ৫টি বিধানসভাতে তৃণমূল কংগ্রেসকে জেতাতে এবার মহিলাদের আঁচলে আঁচলে গিঁট বাঁধতে বললেন মহিলা তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।শনিবার আলিপুরদুয়ার পেক্ষাগৃহে এক কর্মিসভায় তিনি বিজেপি তথা বিরোধীদের পরাস্ত করতে রাজ্যের মহিলারাই যথেষ্ট বলে দাবি করে বলেন, “মহিলারা যদি নিজেদের আঁচলের গিট শক্ত করে রাখতে পারেন, একতাবদ্ধ থাকেন তাহলে বিরোধী রাজনৈতিক দলের অপশক্তি অনেক দূর পৃথিবীর কোনও শক্তি বাংলাকে দুর্বল করতে পারবে না।” এরপরেই কেন্দ্রের কৃষি বিলের বিরোধিতা করে আলিপুরদুয়ার জেলাসদরে মহিলাদের নিয়ে মিছিলে পা মেলান নেত্রী।
শনিবার আলিপুরদুয়ারে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকা কর্মিসভাতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। নিজের বক্তব্যে রাজ্যে গত ১০বছরে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মহিলাদের উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে এবং দেশে বিজেপি মহিলাদের জন্য কি করেছে তার তুলনা তথ্য দিয়ে তুলে ধরেন। বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মায়ের স্নেহ উপলব্ধি করেন, তার সামান্য একজোড়া হাওয়াই চটি মাটির গন্ধ পায়,মানুষের নারির স্পন্দন বোঝেন তিনি। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার নয় রাজ্যে আজ মা মাটি মানুষের সরকার রয়েছে। দেশের মধ্যে মহিলারা আজ এই রাজ্যে সুরক্ষিত। দেশের সংবিধানে যেখানে ৩৩ শতাংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে, তাকে আরও উচ্চতায় নিয়ে গিয়ে রাজ্যে আজ ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে ৫০শতাংশ মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়েছেন মহিলারা।কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রকল্প সামাজিক মর্যাদা বাড়িয়েছে মেয়েদের।আইসিডিএস, আশা, হাজার হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী মহিলাদের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করেছে। তাই আজ বাংলায় মেয়েদের লড়াই পুরুষদের সঙ্গে নয়। বিজেপি নামক অপশক্তির বিরুদ্ধে।” মহিলাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,“বাংলায় বাইরে থেকে বহিরাগতরা আসছেন। পূর্ব পরিকল্পনা নিয়ে। কখনো ডায়মন্ডহারবারে, কখনো শিলিগুড়িতে, তারা নোংরা চক্রান্ত করছে। শান্ত উত্তরবঙ্গকে অশান্ত করছে।এদের রুখতে হবে। দিল্লি আজ চারদিক থেকে অবরুদ্ধ। কৃষক শুধু পুরুষরাই নয়, মহিলারাও চাষ আবাদ করেন। কৃষকদের পাশে থাকতে হবে। বিজেপির সাম্প্রতিক কার্যকলাপকে সামনে রেখে তিনি বলেন, আমরা তাদেরই বহিরাগত বলছি যারা ভোট নিতে বাংলায় আসেন। যাদের বাংলার ২৩টি জেলা, ৪২ হাজার গ্রাম সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। যারা বাংলার কৃষ্টি সংস্কৃতিকে মর্যাদা দেয় না। যারা এও জানে না রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম কোথায় হয়েছিল।” ২০১৬ সালেও কেউ কেউ গেল গেল রব তুলেছিলেন। তবে মানুষ রাজনৈতিকভাবে গণতান্ত্রিক চটির বাড়ি মেরেছিল। এবারও তার থেকেও ভাল ফল আমরা করবো।
এদিন মহিলাদের একতাবদ্ধ থেকে কাজ করতে দল সংগঠনের কাজ করতে নির্দেশ দিয়ে যান। এদিন, দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনের সাথে তাল মিলিয়ে শত শত মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে জেলাসদরের বক্সা ফরেস্ট রোড ধরে মিছিল করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সভায় মৃদুল গোস্বামী, সৌরভ চক্রবর্তী, জেমস কুজুর, শিলাদাস সরকার, দশরথ তিরকি, দীপিকা রায়ের মত পরিচিত নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।