আমাদের ভারত, ২২ মে: ভোট পরবর্তী হিংসার ইতিহাস এবং গোয়েন্দা রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে লোকসভা নির্বাচনের পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনী এরাজ্যে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সূত্রের খবর, ৩০০ কোম্পানির বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে ভোটের ফল প্রকাশের পরেও থাকবে।
২১-র বিধানসভা নির্বাচনের পরে এরাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় বিরোধী দলের দশজনেরও বেশি কর্মী সমর্থকের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন বহু। আর এসব ক্ষেত্রেই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই বারবার রাজ্যের বিরোধী দলগুলি লোকসভা ভোটের পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনী রেখে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল। বিরোধীদের দাবি ছাড়াও লোকসভা নির্বাচনের পরে রাজ্যের সন্ত্রাসের ছবি ফিরে আসার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে গোয়েন্দা রিপোর্টেও। ফলে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্য থেকে প্রত্যাহার করা হলে ভোটের পর হিংসা শুরু হতে পারে। তাই আগামী ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার পরেও আরো ১৫ দিন রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে বলে খবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে।
সিআইএসএফ, সিআরপিএফ, বিএসএফ, এসএসবি মিলিয়ে ৩২০ কোম্পানির কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে বাছাই করা বেশ কিছু এলাকায় মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিআইএসএফের এক কর্তা বলেছেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী ১৫ দিনের বেশিও রাখা হতে পারে বাহিনী। ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
২০২১ এর ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে তার তদন্তভার নিয়ে ৩০টির বেশি মামলা দায়ের করে সিবিআই। রাজ্যের শাসক দলের কয়েকজন সমর্থক জেল হেফাজতেও রয়েছে।
তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, শুধুমাত্র ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা নয়, বিগত বছরে পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির জন্য একের পর এক বড় বড় ঘটনা ঘটে চলেছে। উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে ইডি এবং পূর্ব মেদনীপুরের ভূপতিনগরে এনআইএ’র মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। সেই সমস্ত বিষয়কে মাথায় রেখেই ভোটের ফল প্রকাশের পরেও রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রেখে দিতে চাইছে কেন্দ্র সরকার।