আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ২৩ ফেব্রুয়ারি: আদিবাসী মা ও তার দুই সন্তান খুনে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করছে পুলিশ। তারই প্রতিবাদে রবিবার বীরভূমের মহম্মদবাজার থানার সামনে বিক্ষোভ দেখালো বিজেপি। থানার সামনে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে থানা চত্বরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিজেপি কর্মীরা। পরে পুলিশের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেয় বিজেপি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বীরভূমের মহম্মদবাজার থানার ম্যানেজার পাড়ায় একটি বাড়ি থেকে আদিবাসী মহিলা ও তার দুই সন্তানের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ নয়ন বিত্তার এবং সুনীল মির্ধা নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে।
জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেন, নয়ন খুন করেছে। সুনীল তাকে পালাতে সাহায্য করেছে। পুলিশের দাবি, নয়নের কাছ থেকে নিহত মহিলার মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। তবে খুনের বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দিয়ে তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার। কিন্তু পুলিশের এই তদন্তে বিশ্বাস রাখতে পারছে না বিজেপি। তাদের দাবি, একজন রাজমিস্ত্রি খুনের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। কিন্তু পুলিশ তাকে আড়াল করতে চাইছে। তারই প্রতিবাদে বিজেপি এদিন থানায় বিক্ষোভ দেখায়। বিকেলে কাঁইজুলি স্কুল মাঠ থেকে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা মিছিল করে থানা চত্বরে জমায়েত হন। থানার ভিতর ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধার সৃষ্টি করে। এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিজেপির ধ্বস্তাধস্তি বেধে যায়। বিজেপি কর্মীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে থানা চত্বরে ঢুকে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে দলের বীরভূম সাংগঠনিক সভাপতি ধ্রুব সাহার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ওসি তাপাই বিশ্বাসে হাতে দাবি পত্র তুলে দেয়।
ধ্রুব সাহা বলেন, “পুলিশ ১২ ঘণ্টার মধ্যে খুনের কিনারা করেছে বলে দাবি করছি। কিন্তু কোন যন্ত্রের মাধ্যমে অসাধ্য সাধন করলেন আমরা জানতে চাই। আমরা এলাকায় গিয়ে জেনেছি একজন রাজমিস্ত্রি এই খুনের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। কিন্তু পুলিশ তাকে ধরছে না। ঘটনার পর জেলা পুলিশ মহম্মদবাজার থানায় ওসি পদে নিয়ে আসে তাপাই বিশ্বাসকে। ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে। এর আগেও তাকে মহম্মদবাজার থানার ওসি করা হয়েছিল, কিন্তু আদিবাসীদের আন্দোলনে তাঁকে সরাতে বাধ্য হয় জেলা পুলিশ। উনি তৃণমূল কংগ্রেসের একজন নেতা। তাঁকে পুনরায় কেন মহম্মদবাজার থানায় নিয়ে আসা হল সেটাও আমরা দেখব। এখন তাঁকে দিয়ে দেউচা-পাঁচামিতে আদিবাসীদের জমি ছিনিয়ে নিতে চাইছে প্রশাসন। আমরা কয়লাখনির বিরুদ্ধে নয়, তবে আদিবাসীদের খুন করে আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে আমরা।”