আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ২২ এপ্রিল: ২০২১ সাল থেকে চলা এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা হল সোমবার। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার রায় দিয়েছে। তার ফলে ২০১৬ সালের এসএসসির সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল বলে গণ্য হলো। তারপরই প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় বিচার বিভাগকে ধন্যবাদ জানান শিক্ষিকা সোমা দাস। পাশাপাশি, তিনি প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং আইনজীবী ফিরদৌস শামিমকে ধন্যবাদ জানান। জাস্টিস গাঙ্গুলি প্রথম দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হন। আর শামিম সাহেব আমার কাছে একটি পয়সাও নেননি।
২২ মে ২০২২ সোমা দাসকে নিয়োগপত্র দেওয়ার নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি। সেই সুপারিশ মেনে ৩১ মে ২০২২ তারিখে সোমা দাসকে শিক্ষিকা পদে নিয়োগপত্র দেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন। শিক্ষিকা সোমা দাস নিজের বাড়িতে ছিলেন এদিন। টিভিতে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার রায় শোনেন তিনি। তারপরই প্রতিক্রিয়ায় জানান, ১৮৬ দিন আন্দোলন করেছিলেন তিনি। এখনও অনেক সহকর্মী চাকরি পাননি। আমি তাঁদের বলবো, আরেকটু ধৈর্য্য ধরুন। আপনারাও হকের চাকরি পাবেন। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে আমার শরীর খুব খারাপ হয় এবং কেমো শুরু হয়। খুবই আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে পড়ি। প্রথমে সল্টলেকে আন্দোলন শুরু হয় তারপর পুলিশ আমাদের উপর আক্রমণ করে তুলে দেয়। তারপর কোর্টের নির্দেশে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে আন্দোলন চালিয়ে যাই। আজ যারা সাদা খাতা জমা দিয়ে যোগ্যতা ছাড়া চাকরি পেয়েছে তারা তো দোষী। তারা ঘুষ দিয়ে অন্যায়ভাবে নেতা ধরে চাকরি নিয়েছে। কিন্তু আমাদের মতো যারা মেধা থাকা সত্বেও বঞ্চিত, শাস্তি তো তারাই এতদিন ভোগ করলো।
এদিন এই রায়ের ফলে ২৬ হাজার চাকরিপ্রাপকের চাকরি বাতিল হয়ে গেল। তালিকার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের ১২ শতাংশ সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে হবে ৪ সপ্তাহের মধ্যে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, নতুন চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়া ১৫ দিনের মধ্যেই শুরু হবে।
এদিন সোমা দাস বলেন, অভিজিৎ গাঙ্গুলি একজন সৎ ব্যক্তি। সমাজ মাধ্যমে উনি আমার কথা শুনে আমাকে অন্য চাকরি দিতে চান। আমি সেটা গ্রহণ করিনি। আমি আমার চাকরি চেয়েছিলাম। মামলা করতে হয়েছিল। তারপর সহানুভূতির ভিত্তিতে আমি আদালতের নির্দেশে চাকরি ফিরে পাই। তবে, এটা বাস্তব উনার দেওয়া রায় আজ সত্য প্রমাণিত হয়েছে। বললেন বীরভূমের চাকরি প্রাপক সোমা দাস।