Physical abuse, Bangaon, বনগাঁয় পরপর দুটি কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় স্ত্রীকে মারধর, শারীরিক অত্যাচার

সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১৪ নভেম্বর: পুত্রসন্তানের বদলে কেন পরপর দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে স্ত্রী। আর সেই ‘অপরাধে’ দীর্ঘ দিন ধরে স্ত্রীর উপর শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার চলছিল স্বামীর। অবশেষে অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পেতে স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্ত্রী। পরে কন্যাসন্তানকে সঙ্গে নিয়ে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নিলেন স্ত্রী। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থানার কালুপুর এলাকার। অত্যাচারিত স্ত্রীর নাম পূর্ণিমা মন্ডল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পরপর দুটি কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় স্ত্রীর উপর অসন্তুষ্ট স্বামী অরবিন্দ মন্ডল। আর তাই নানা অছিলায় স্ত্রীর উপর অকথ্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হতো। স্বামীর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলেছেন স্ত্রী পূর্ণিমা। তার অভিযোগ, ছেলে নেই, সেই আফসোসে তাঁর উপর অত্যাচার চলে আসছে। বৃহস্পতিবার সকালে স্ত্রীকে ঘরের মধ্যে আটকে কোপানোর অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি ছোট মেয়েকেও বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পরই হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে থানার দ্বারস্থ হন গুরুতর আহত স্ত্রী পূর্ণিমা মন্ডল।

স্ত্রী পূর্ণিমা দেবী জানিয়েছেন, প্রতিদিনই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়িতে এসে তাঁর উপর অত্যাচার চালায় তার স্বামী। স্ত্রীর আরও অভিযোগ, তার স্বামী নেশার দ্রব্য বিক্রি করে। প্রতিবেশীরা থানার অভিযোগ দায়ের করার পর বাড়িতে হানা দিয়ে তার স্বামীকে ধরতে পারেনি। এই অত্যাচারের বিষয়টি শাশুড়ি সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে জানিয়েও কোনভাবে অত্যাচারের হাত তেকে রেহাই মেলেনি। যার কারণে তিনি শেষপর্যন্ত স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।

পূর্ণিমা দেবী বলেন, ‘আমার দুটি মেয়ে। ছেলে হয়নি কেন, তাই নিয়ে নিয়মিত অত্যাচার করে স্বামী। যে কোনো বিষয়ে অশান্তি শুরু করে গালিগালাজ, মারধর করে। বাবার বাড়ি থেকে দেওয়া কিছু টাকা গচ্ছিত রেখেছিলাম। সেই টাকা দিতে আপত্তি করায় আমাকে এবং ছোট মেয়েকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেয়। নিরুপায় হয়েই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে স্বামী অরবিন্দ মন্ডল বলেন, ‘স্ত্রী যা অভিযোগ করেছে, তা সব মিথ্যে। ওর মাথায় সমস্যা আছে। আমি মারধর করিনি। আমি মেয়েদের ভালবাসি। স্ত্রীকে ফোন করেছিলাম, সব মিটিয়ে নিয়েছি।’ স্বামীর অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে বর্তমানে বাপের বাড়ি চারঘাটেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্ত্রী পূর্ণিমা মন্ডল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *