সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৭ আগস্ট: আর জি কর কান্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে সমস্ত চিকিৎসকরা যোগ দেওয়ায় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে উদ্বিগ্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর আত্মীয় পরিজনরা। তাদের চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে হাসপাতালে নায্যমূল্যের ওষুধের দোকান বন্ধে। গত ১৫ আগস্ট থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বন্ধ হয়ে গেছে ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকান। এই নিয়েই সরব রোগীর আত্মীয় পরিজনরা। এক্ষেত্রেও অনিয়ম ও দুর্নীতি থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তারা।
জুনিয়ার চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে বিপর্যস্ত জেলার স্বাস্থ্য পরিষেবা। তার ওপর শনিবার কর্ম বিরতিতে সামিল হন সর্ব স্তরের চিকিৎসকরা। এতে চরম সমস্যায় পড়েন রোগী ও তার পরিজনেরা। যদিও এই কর্মবিরতিকে প্রায় সকলে একবাক্যে সমর্থন করলেও তাদের সমস্যার কারণ অন্য। স্বাস্থ্য পরিষেবার এই ডামাডোল পরিস্থিতির মাঝেই টেন্ডার শেষ হয়ে যাওয়ায় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বন্ধ হয়ে গেছে ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকান।এতেই চরম সমস্যায় পড়েছেন রোগীরা। এই ওষুধের দোকানের টেন্ডার গত ১৪ অগস্ট ২৪ শেষ হয়ে গেছে। তাই ওই দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে।
এনিয়েও রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের দিকেই আঙ্গুল তুলছেন অনেকেই। তাদের বক্তব্য, গত ২০১২ সালে রাজ্যের অধিকাংশ মেডিক্যাল কলেজ, মহকুমা হাসপাতাল ও কিছু সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকান চালু হয়। টেন্ডার ডেকে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয় এই দায়িত্ব। এই দোকানগুলি থেকে ৫০ শতাংশের বেশি ছাড় পেতেন ক্রেতারা। প্রথম টেন্ডার ডাকা হয় ৪ বছরের জন্য। সেই অনুসারে ২০১৬ সালে টেন্ডারের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। সেই সময় কথা ছিল ৪ বছর পর ফের টেন্ডার ডাকা হবে। কিন্তু কোনো অজানা কারণে ফের টেন্ডার আর হয়নি। সেই টেন্ডারের মেয়াদ সময়সীমা বারবার বাড়িয়ে প্রথমবার বরাত পাওয়া সংস্থাগুলিকেই ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকানগুলি চালিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত ১৪ অগস্ট বর্ধিত সেই মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। নতুন করে টেন্ডার ডাকা হয়। এতে দায়িত্ব পায় নতুন নতুন সংস্থা। নতুন বরাত পাওয়া সংস্থাগুলি বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ সহ অন্যান্য হাসপাতালগুলিতে পরিকাঠামো তৈরি করে উঠতে না পারায় নাকি চালু করতে পারেনি দোকান। তাতেই সমস্যায় রোগী থেকে রোগীর পরিজনরা।
বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনিবার আসা রোগীর পরিজন অসিত সাউ ও হেমন্ত সাউ জানান যে, গত কয়েকদিন ধরে তাদের রোগী ভর্তি রয়েছে। সারা রাজ্যে যা চলছে তাতে উপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছ না। এতে চিকিৎসকদের কিছু করার নেই। তারাও তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করছেন। তবে ভেবেছিলেন হাসপাতাল থেকেই ওষুধ কিনে এই দু’একটা দিন চালিয়ে নেবে। সেই সুযোগটাও এখন আর নেই।