Aurangzeb, Nagpur, ঔরঙ্গজেবের সমাধি বিতর্ক! রণক্ষেত্র নাগপুর, সাম্প্রদায়িক অশান্তিতে উত্তপ্ত শহর, জারি কারফিউ

আমাদের ভারত, ১৮ মার্চ: সাম্প্রদায়িক অশান্তিতে উত্তপ্ত মহারাষ্ট্র। ঔরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর দাবি ঘিরে ঝামেলা শুরু। তারপর একটি গুজবকে কেন্দ্র করে অশান্তি তুঙ্গে ওঠে। বহু গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ও ইট পাটকেল ছোড়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চার্জ করেছে। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাঠিয়েছে। গোটা ঘটনায় পরিবেশ থমেথমে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিরাট পুলিশ বাহিনী।

ঔরঙ্গজেবের সমাধি নিয়ে বিতর্ক হিংসাত্মক রূপ ধারণ করেছে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে। সোমবার রাতে শহরের মহল এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। মহলের পর গভীর রাতে হিংসা ছড়ায় হাঁসপুরিতেও। দোকানপাট ভাঙ্গচুর ও গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ব্যাপক পাথর ছোড়াছড়িও হয়। অশান্তি ছড়িয়ে পড়া আটকাতে এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।

প্রথমে অশান্তির ঘটনা ঘটে নাগপুরের মহলে। প্রচুর মানুষ আহত হয়। এর মধ্যে পুলিশ কর্মীরাও রয়েছেন। উত্তেজিত জনতা ২৫টির বেশি বাইকে ও তিনটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এখনো পর্যন্ত ৬০ থেকে ৬৫ জনকে আটক করা হয়েছে। ২৫-৩০ জন পুলিশ আহত হয়েছে।

নাগপুরের সম্ভাজী নগরে ঔরঙ্গজেবের সমাধি নিয়ে বিরোধের মধ্যেই অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এই সমাধিটি ভেঙ্গে ফেলার দাবি জানায়। উভয় গোষ্ঠী সোমবার সকালে প্রতিবাদ মিছিল করে। তার কয়েক ঘণ্টা পর অশান্তি শুরু হয়।

সোমবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ মহল এলাকায় চিটনেস পার্কের কাছে প্রথম হিংসা শুরু হয়। দুষ্কৃতীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই এলাকাটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একের পর এক গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকজনের বাড়িতেও পাথর ছোড়া হয়। এরপর রাত সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে এগারোটার মধ্যে ওল্ড ভান্ডারা রোডের কাছে হাঁসপুর এলাকায় আরেকটি সংঘর্ষ হয়। উত্তেজিত জনতা বহু গাড়ি পুড়িয়ে দেয়।

নাগপুর পুলিশ বলেছে একটা গুজবের কারণে সংঘর্ষ শুরু হয়। নাগপুর পুলিশের ডিসিপি জানিয়েছেন,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে পাথর ছোড়া হয়েছিল, তাই শক্তি প্রয়োগ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়েছে।

অভিনেতা ভিকি কৌশলের ছবি ছাবা কিছুদিন আগে মুক্তি পেয়েছিল। তারপর থেকে এই ইস্যুতে প্রতিবাদ আরো জোরদার হয়।

মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফরনবিশ কয়েকদিন আগে ঔরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর কথা বলেছিল। সমাজবাদী পার্টির নেতা আবু আজমী দাবি করেন, বিতর্ক আরো বেড়ে যায় যখন ঔরঙ্গজেব নিষ্ঠুর ছিলেন না তখন চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ঔরঙ্গজেবের ভুল চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। এরপর থেকে ঔরঙ্গজেবের সমাধি সারানোর দাবি জোরালো হয়। মাত্র একদিন আগে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল হুমকি দেয়, সরকার যদি ঔরঙ্গজেবের সমাধি না সরায় তাহলে বাবরির পরিণতির পুনরাবৃত্তি হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *