Gaudiya Math, গৌড়ীয় মঠে অনুষ্ঠিত হল সংস্কার ভারতীর বার্ষিক সাধারণ সভা

মিলন খামারিয়া, আমাদের ভারত, কলকাতা, ১১ আগস্ট: আজ কলকাতার বাগবাজারের গৌড়ীয় মঠ সভা কক্ষে আয়োজিত হলো সংস্কার ভারতীর ৩৭তম বার্ষিক সাধারণ সভা। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন সংস্কার ভারতীর কেন্দ্রীয় অন্যতম সম্পাদিকা নীলাঞ্জনা রায়, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের পূর্ব ক্ষেত্র-এর সহ-ক্ষেত্র প্রচারক জলধর মাহাতো, দক্ষিণবঙ্গ প্রান্তের সঙ্ঘচালক জয়ন্ত পাল, দক্ষিণবঙ্গ প্রান্তের কার্যবাহ শশাঙ্ক শেখর দে।

এদিন বঙ্গাব্দের প্রবর্তক মহারাজা ‘শশাঙ্ক’ এই দাবিকে বাংলায় প্রতিষ্ঠা দেওয়ার জন্য উদ্যোগী হবে সংস্কার ভারতী, এমনই প্রস্তাব গ্রহণ করলো ‘সংস্কার ভারতী’র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সমিতি।

বঙ্গাব্দের প্রবর্তক ‘মহারাজা শশাঙ্ক’ এই দাবিকে বাংলায় প্রতিষ্ঠা দেওয়ার জন্য সংগঠনের গৃহীত প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, “স্বাধীন সার্বভৌম গৌড়ের শাসক শশাঙ্ক নিজের শাসনকালের সূচনাকে স্মরণীয় করে রাখতে সূর্যসিদ্ধান্ত ভিত্তিক বর্ষপঞ্জী বঙ্গাব্দের সূচনা করেন। সেখান থেকেই বঙ্গাব্দের প্রবর্তন হয়। তাই বঙ্গাব্দের প্রবর্তক মহারাজা শশাঙ্ক। এই ইতিহাস সত্য সিদ্ধান্তকে বাংলার সংস্কৃতি মহলে পৌঁছে দিতে সংস্কার ভারতী বদ্ধপরিকর।” ইতিমধ্যেই বাংলার বুকে প্রথম মহারাজা শশাঙ্কের ভাস্কর্য নির্মাণ করেছে সংস্কার ভারতী।

এদিনের বৈঠকে সংস্কার ভারতীর দক্ষিণবঙ্গ প্রান্তের ১৪টি জেলা থেকে ৭০ জন শিল্পী অংশ গ্রহণ করেন। সকলের উপস্থিতিতে এবার ৫টি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলার কীর্তনের ধ্রুপদী স্বীকৃতির জন্য উদ্যোগী হলো সংস্কার ভারতী।

বাংলায় কীর্তনের বহু রূপ। লীলা, পদাবলী, রাসলীলা-সহ নানা নামে কীর্তন পরিবেশন করেন বাংলার শিল্পীরা। কিন্তু খাতায়-কলমে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার কীর্তনকে ধ্রুপদী সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। বাংলার কীর্তনের ধ্রুপদী স্বীকৃতির জন্য উদ্যোগী হবে সংস্কার ভারতী। বাংলার নিজস্ব শাস্ত্রীয় সঙ্গীত কীর্তনের কপালে শুধুই অবহেলা জুটেছে এতকাল। অথচ চর্যাপদে যে প্রবন্ধগীতির উল্লেখ রয়েছে, তারই পরবর্তী রূপ বাংলার কীর্তন। এই প্রবন্ধসঙ্গীত থেকেই ধ্রুপদ, ধামার প্রভৃতির উৎপত্তি এবং সেগুলি শাস্ত্রীয় মর্যাদা পেয়েছে। তা হলে বাংলার কীর্তন শাস্ত্রীয় মর্যাদা পাবে না কেন? এই নিয়েই সোচ্চার হচ্ছে দেশের সর্ব বৃহৎ সাংস্কৃতিক সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সমিতি।

বিভিন্ন রাজ্যের সরকার নিজস্ব প্রাদেশিক সংস্কৃতির ধ্রুপদী মর্যাদার জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানায়। তার ভিত্তিতেই কেন্দ্র পদক্ষেপ করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, বাংলার কোনো সরকারই কোনও দিন সেই দাবি তোলেনি। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন রাজ্যের হাজার হাজার শিল্পীরা। বাংলা সঙ্গীতের আদি ধারা কীর্তনের জন্য এবার তদবীর করবে অখিল ভারতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ‘সংস্কার ভারতী’।

বার্ষিক সাধারণ সভায় সংস্কার ভারতীর নতুন সমিতিতে – সভাপতি স্বরূপ প্রসাদ ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক তিলক সেনগুপ্ত, সহ-সাধারণ সম্পাদক অমিত দে, কোষাধ্যক্ষ গোপাল কুণ্ডু’র নাম ঘোষণা হয়। সংস্কার ভারতী’র দক্ষিণবঙ্গ প্রান্তের সাধারণ সম্পাদক তিলক সেনগুপ্ত বলেন, “আগামী দিনে সংস্কার ভারতী বাংলাজুড়ে বঙ্গাব্দের প্রবর্তক মহারাজা শশাঙ্ক এই নিয়ে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ
করবে।”

সংস্কার ভারতীর কেন্দ্রীয় অন্যতম সম্পাদিকা নীলাঞ্জনা রায় বলেন, “সংস্কার ভারতী বাংলার কীর্তনের ধ্রুপদী স্বীকৃতির জন্য উদ্যোগী হবে। সেই কাজ শুরু করেছি আমরা।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *