আমাদের ভারত, ৪ জুলাই: কসবা ল’ কলেজে গণধর্ষণ কান্ডের পর থেকে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদের বিরুদ্ধে। আর তাতেই অস্বস্তি বাড়ছে রাজ্যের শাসক দলের। এবার দলের অস্বস্তির কারণ হয়েছে একসময়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেত্রী রাজন্যা হালদারের বিস্ফোরক অভিযোগে। তাঁর অভিযোগ, ল’ কলেজের অভিযুক্ত মনজিত মিশ্রের বিরুদ্ধে এই ধরনের আচরণের ইতিহাস রয়েছে তার ক্ষেত্রেও। শুধু তাই নয়, তাঁর দাবি, সেই নোংরামির সাক্ষীও আছেন বহুজন।
রাজন্যার কথায়, এখন কিছু জানতাম না বুঝতাম না বললে সেটা ভুল হবে, বরং নিজেরাই কোথাও না কোথাও দাদাদের এই সংস্কৃতিকে মদত দিয়েছি। যার ফলে আজকের এই ভয়াবহ চিত্র দেখতে হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, অভিযুক্ত মনজিৎ তার প্রেমিকার সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও নিজেই ছড়িয়ে দেয়। আর সেই ঘটনাই অভিযুক্তের বিকৃত মানসিকতার প্রমাণ।
ব্যক্তিগতভাবে মনজিৎ- এর সঙ্গে রাজন্যার খুব একটা ঘনিষ্ঠতা না থাকলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মঞ্চে মুখ চেনা সম্পর্ক ছিল। প্রান্তিক, যে রাজন্যার স্বামী, তার সূত্রে একাধিকবার দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে তাদের।
প্রাক্তন এই টিএমসিপি নেত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, আমি যদি টুকরো টুকরো ভাবে এত কিছু জানতে পারি, যারা বহু বছর ধরে সংগঠনের শীর্ষে রয়েছে তারা জানতো না ? তাঁর মতে, এক ধরনের দাদাগিরি সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। যেখানে কিছু পুরুষ নেতাদের প্রভাব এতটাই বেশি, যে তারা মেয়েদের সম্মান নিয়ে খেলতে দ্বিধা করে না। রাজন্যার দাবি, এই দাদারা পদ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে মেয়েদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে। যা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। তাঁর কথায়, এই আধিপত্যবাদী মানসিকতার অবসান হওয়া উচিত। এখন যদি না হয়, তাহলে আর কবে?
তিনি জানান, এসবের শিকার তিনি নিজেও। তিনি জানান, এআই দিয়ে তৈরি আমার বিকৃত অশ্লীল ছবি রাখা হয়েছিল কসবা কাণ্ডে অভিযুক্তের মোবাইলে। সেই ছবি দেখানো হতো জুনিয়রদের। ছবি দেখে পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করতো ওরা। আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলাম। তিনি জানিয়েছেন, ওই টিএমসিপি নেতার বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তাকে নানা কথা শুনতে হচ্ছে। ২১ জুলাই- এর মঞ্চে বক্তৃতা দেওয়ার আগে তিনি কার সঙ্গে কী করেছিলেন সেসব নাকি ফাঁস করে দেওয়ার কথা হচ্ছে।
তাঁর বক্তব্য, তিনি কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ জানাতে চাননি। কারণ তিনি মুখ খুললেই তৃণমূলের দিকে আঙ্গুল উঠত। তিনি চাননি তার দলকে কোনভাবে অপমানিত হতে হোক।
২৬- এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে আর জি কর থেকে শুরু করে কালীগঞ্জ, কসবা, একের পর এক ঘটনায় যথেষ্টই চাপে পড়েছে শাসক দল। যদিও রাজন্যার করা এই অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পাত্তাই দেয়নি মেয়র ফিরহাদ হাকিম।