Birbhum, লোকসভা নির্বাচনের পরেই খোয়াজমহম্মদপুরে বোমা ও গুলি চালিয়ে দাপাদাপি দুষ্কৃতীদের, একজন সিভিক ভলান্টিয়ার সহ জখম দু’ পক্ষের ২, আটক ২

আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ৩০ মে: বোমা বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হল বীরভূমের খোয়াজমহম্মদপুর গ্রাম। দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে চলে গুলি ও বোমা। মারধর করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ারকে। গুলিবিদ্ধ হন একজন। ঘটনায় জখম হয়েছেন দুই জন। দুবরাজপুর থানার পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে।

গ্রাম দখলের লড়াইয়ে মাঝেমধেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দুবরাজপুর থানার যশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খোয়াজমহম্মদপুর গ্রাম। মূলত শেখ আজমের গোষ্ঠীর সঙ্গে শেখ সেলিমের গোষ্ঠীর লড়াইয়ে অতিষ্ঠ গ্রামের মানুষ। বৃহস্পতিবার দুপুরবেলা হঠাৎই শেখ আজমের বাড়ির ছাদে বোমা ফাটার শব্দ শুনে গ্রামে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে যায়। গ্রামবাসীরা আজমের বাড়ি ঘিরে ফেলে। সেই সময় নিকট আত্মীয় আজমের বাড়ির কাছে যেতেই সিভিক ভলান্টিয়ার শেখ রাজুকে মারধর শুরু করে শেখ সেলিম গোষ্ঠীর লোকজন। এইনিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে আজম গোষ্ঠী গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ। গুলিবিদ্ধ হন শেখ ওসমান। তাঁকে দুবরাজপুর ব্লক হাসপাতালে চিকিৎসার পর বর্ধমানে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিভিক ভলান্টিয়ার শেখ রাজুকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

ওসমান বলেন, “আজম বর্তমানে কংগ্রেস করে। বাড়ির ছাদে বোম শুকোতে দিয়েছিল। কোনভাবে সেই বোম ফেটে যায়। বোমার শব্দ শুনে বাড়ি থেকে বাইরে বের হতেই আমার বাম পায়ের উপর গুলি লাগে। আজম গোষ্ঠীর লোকজন গুলি ছোঁড়ে”।

যাকে নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত সেই শেখ আজমকে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। শেখ আজম বলেন, “আমার দোতলা বাড়ির ছাদে পাশের বাড়ির একতলা ছাদ থেকে বোমা ছুড়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে শেখ সেলিম গোষ্ঠীর গুলশান শেখ, সামাই শেখ, সেলিম শেখ, শেখ হাসমতরা। আমি শারীরিকভাবে অক্ষম। হুইল চেয়ার নিয়ে যাতায়াত করি আমাকে পুলিশ থানায় তুলে এনেছে। অথচ অধরা অশান্তি সৃষ্টির মূল দুষ্কৃতীরা”।

তৃণমূল কংগ্রেসের যশপুর অঞ্চলের সভাপতি মুন্সি মোজাম্মেল হক ওরফে কাঞ্চন জানান, কংগ্রেস দুষ্কৃতীরা গ্রামে ভোট গণনার পর অশান্তি সৃষ্টি করতেই বোমা, গুলি ও বন্দুক অতি সন্তর্পনে মজুত করছিল। ছাদে বোমা শুকোতে দিয়েছিল। অতিরিক্ত রোদের তাপে কোনো কারণে বোমা ফেটে যায়। গ্রামবাসীরা ঘর থেকে ঘিরে রেখে পুলিশে খবর দেয়। ভিতরে থাকা দুষ্কৃতীরা পালাতে গিয়ে গ্রামবাসীদের হাতে দু’ চার থাপ্পড় খেয়ে থাকবে। তাদের মধ্যে সিভিক ভলান্টিয়ার শেখ রাজুও ছিল। সেও পালাতে গিয়ে মার খেয়েছে। গ্রামের মানুষ বোম বারুদ ও গুলি বন্ধুকের প্রতিরোধ করেছে মাত্র। এসবের মূলে শেখ আজমের সঙ্গে যোগ দিয়েছে শেখ গোলাব, শেখ মাইউদ্দিন, শেখ নজাই, মীর বজাই সহ বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী, বর্তমানে যারা কংগ্রেসের ছত্রছায়ায়”।

পুলিশ জানিয়েছে, আধা সামরিক বাহিনী গ্রামে টহল দিচ্ছে। দুষ্কৃতীরা যাতে গ্রাম ছেড়ে পালাতে না পারে সেদিকে নজর রাখছে পুলিশ বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী যৌথভাবে। দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *