Unemployment বেকারসমস্যা, মহালয়া-সুদীপ্তর পর্যবেক্ষণ নিয়ে চর্চা

অশোক সেনগুপ্ত
আমাদের ভারত, কলকাতা, ৬ এপ্রিল: লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের নানা ইতিবাচক কথা শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে। সেই সময় সামাজিক মাধ্যমে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপিকা মহালয়া চট্টোপাধ্যায়ের একটি পোস্ট বড় মাপের প্রশ্ন তুলে দিল।

শনিবার সকালে তিনি লিখেছেন, “২০১৬ থেকে আমার বিভাগের কর্মসংস্থানের দায়িত্বে আছি। এবছর হাল খুব খারাপ। সংস্থা বিশেষ আসছেই না, এলেও নিচ্ছে না, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছাত্ররা প্রথম ধাপ পেরোতে পারছে না। গত বছর কিন্তু ভালোই হয়েছিল চাকরি।

কাল সকালে ঘুম ভাঙলো গত বছরের প্রথম স্থানাধিকারীর উত্তেজিত ফোনে। ২০২২ সালের প্রথম প্লেসমেন্টেই চাকরি পেয়েছিল। সেই কোম্পানি তাদের জানিয়েছিল, ১৫ এপ্রিল থেকে ট্রেনিং শুরু হবে আর মে মাসে ‘অন-বোর্ড’। তার বদলে মধ্যরাত্রে মেল, তারা ‘অফার রিভোক’ করে নিচ্ছে। শুধু তাদের ছয়জনের নয়, ২০২২-২৩ সালে সারা ভারতে যত ছাত্রকে চাকরি দিয়েছিল, সকলের। মেয়েটিকে যথাসম্ভব সান্তনা দিলাম, বললাম কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের টপার কখনও বেকার থাকে না।
পরে কিন্তু নিজের কথাগুলো নিজের কাছেই ফাঁপা লাগলো! এর পরেও বিশ্বাস করতে হবে সুসময়!”

অনেক প্রতিক্রিয়া এসেছে এই পোস্ট-এর। দুর্গাপুরের রানি রাসমনি স্কুল অফ আর্কিটেকচারের অধ্যক্ষা ইন্দ্রানী ধর লিখেছেন, “এই পরিস্থিতির শিকার শুধু আপনার কলেজের পড়ুয়াদের নয়, অন্য অনেক কলেজের পড়ুয়ারাও ক্যাম্পাসিংয়ে নির্বাচিত হয়ে পরে এই অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে – হচ্ছে। পড়ুয়াদেরও তাই ক্যাম্পাসিংয়ের উপর ভরসা থাকছে না।”

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রোফেসর অনিন্দিতা সেন লিখেছেন, “এটা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সের প্রসারের প্রভাব। এই চাকরিগুলো মুছে যাচ্ছে। আরও বদল হবে। ভীষণ পরিবর্তন হবে। একমাত্র সর্বোচ্চ দক্ষরাই টিঁকে থাকবে।”

শিব নাদার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরমা রায়চোধুরী
লিখেছেন, “ আমিও শুনলাম একটি ছেলের কথা। ইন্টার্নশিপের শেষ দিন বলছে, ‘তোমাকে নিচ্ছি না’। তার হাতেও তো কিছু নেই এখন। কী দুর্ভাগ্য!“

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অ্যাসিস্টেন্ট প্রোফেসর দেবব্রত রায় প্রতিক্রিয়ায় একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত একটি লেখা পোস্ট করেছেন। লেখাটির বিষয়, বোম্বে আইআইটি-র সর্বশেষ ব্যাচের ৩৬ শতাংশ পড়ুয়া এখনও কর্মহীন।

যদিও যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতক এবং খড়্গপুর আইআইটি-র এম টেক সুদীপ্ত গুহ এঁদের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। বিজেপি-র রাজ্য কমিটির সদস্য সুদীপ্ত শনিবার পৃথক পোস্টে লিখেছেন, “দেশে চাকরির অবস্থা খুব খারাপ তা কিভাবে প্রমান করা যায়? দেশের এক নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছেলেমেয়েরা চাকরি পাচ্ছে না, এই মিথ্যা খবর বাজারে ছাড়লেই হবে। তাই এবার একবারে আইআইটি বোম্বে। ব্যাপারটা ঠিক কিনা জানতে আমাদের পরের ব্যাচের ফার্স্ট বয়, যে এখন ওখানে সিভিলের হেড, তার সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। ৩৬% বেকার বলে যে রটনা হচ্ছে, তার ৩০% চাকরি খুঁজছেই না এবং বাকি ৬% হয় পড়াশুনা করেনি নয় অন্য কোনও সমস্যা আছে। তাছাড়া, এখনো ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ চলছে। বছর শেষ হয়নি। ৩০% যারা চাকরি চাইছে না তারা উচ্চ শিক্ষা বা সরকারি চাকরি বা ব্যবসার চেষ্টা করছে। কেউ চাকরি খুঁজে নিয়েছে।” সুদীপ্তর মন্তব্যকেও সামাজিক মাধ্যমে সমর্থন করেছেন অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *