Doctor, Rampurhat, আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদ করায় রামপুরহাটে বয়কট এক চিকিৎসক

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৭ সেপ্টেম্বর: নিজের প্রেসক্রিপশনে ‘আরজিকর কাণ্ডের বিচার চাই’ স্ট্যাম্প দিয়ে প্রতিবাদ করায় আইএমএ-র রোষানলে পড়লেন এক চিকিৎসক। আইএমএ তাঁকে কার্যত বয়কট করায় রামপুরহাট শহরের নার্সিং হোমগুলি তাঁর অধীনে চিকিৎসারত রোগীদের ভর্তি নিচ্ছে না। ফলে সমস্যায় পড়েছেন রোগী ও তাদের আত্মীয়রা। হেনস্তার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চিকিৎসক আবু নাসিম।

প্রসঙ্গত, আরজিকর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় বিচার চেয়ে নিজের প্রেসক্রিপশনে
“আরজিকরের বিচার চাই, অরপরাধ চক্রের বিনাশ চাই”। ইংরেজিতে লেখা রয়েছে “উই ওয়ান্ট জাস্টিস।” প্রেসক্রিপশনে এমনই স্লোগান লেখা স্ট্যাম্প মেরে প্রতিবাদে সামিল হওয়ায় রামপুরহাট গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন চিকিৎসক দেবব্রত দাসকে কার্যত বয়কট করল আইএমএ।

দেবব্রতবাবুর অভিযোগ, স্ট্যাম্প দিয়ে এবং ধারাবাহিক প্রতিবাদ করায় রামপুরহাটের চিকিৎসক আবু নাসিম তাকে হেনস্তা করেন। এমনকি ওই চিকিৎসক তাকে মারতে উদ্যত হন। শুধু এখানেই শেষ নয়, রামপুরহাট এলাকার ১৩টি নার্সিং হোমের মালিকদের মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করান চিকিৎসক দেবব্রত দাসকে ক্ষমা চাইতে হবে। নচেৎ তাঁর কোনো রোগীকে রামপুরহাটের কোনো নার্সিংহোমে ভর্তি নেওয়া যাবে না।

দেবব্রতবাবু বলেন, “দিন কয়েক আগে একটি নার্সিং হোমের বদ্ধ ঘরে চিকিৎসক আবু নাসিম আরজিকর নিয়ে আন্দোলন প্রসঙ্গ টেনে ২২ বছর আগে ঘটে যাওয়া বিলকিস বানুর ধর্ষণ প্রসঙ্গ তুলে আনেন। তখন আমি চিকিৎসককে বলেছিলাম আরজিকরের সঙ্গে বিলকিস বানুর ঘটনা টেনে আনা অপ্রাসঙ্গিক। দুটি ঘটনার তুলনা বিশেষ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে করা হয়েছে। এই কথা বলার পর আবু নাসিম আইএমএ রামপুরহাট শাখার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। আমি নাকি উনাকে সাম্প্রদায়িক মনভাবাপন্ন বলেছি। কিন্তু আমি কোনদিন সেটা বলিনি।

আমি বলেছি, বিশেষ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বলা হয়েছে। তাছাড়া আইএমএ-র রামপুরহাট শাখাকে আরজিকর নিয়ে কোনো আন্দোলন করতে দেখিনি। অথচ আমাদের বদ্ধ ঘরের বিষয় নিয়ে বৈঠক করার কোনো অধিকার নেই। কিন্তু আইএমএ-র সভাপতি তৃণমূল দলের একজন বিধায়ক। নিজে নার্সিং হোম মালিক। ফলে সমস্ত নার্সিং হোম মালিককে মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয় আমার কোনো রোগীর অপারেশন করা যাবে না। এমনকি এক আদিবাসী মহিলার স্বাস্থসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও তাকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। আমি বিষয়টি আইএমএ-র রাজ্যস্তরে জানিয়েছি। সেই সঙ্গে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং জেলা শাসকের কাছে লিখিত জানিয়েছি”।

আবু নাসিম বলেন, “আমাকে উনি সাম্প্রদায়িক মনভাবাপন্ন বলে কটাক্ষ করেন। তাই আমি আইএমএ’কে জানিয়েছিলাম। সেই মতো আইএমএ উনাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু উনি যাননি। এমনকি নার্সিং হোমের মালিকদের ডাকেও উনি সাড়া দেননি। ফলে আমি সিদ্ধান্ত নিই উনাকে আমার নার্সিং হোমে ঢুকতে দেব না। এমনকি আরও একটি নার্সিং হোম তাঁর রোগী ভর্তি নেয়নি। নার্সিং হোম ব্যক্তি মালিকানাধীন। ফলে তারা কেন ভর্তি নিচ্ছেন না সেটা তাদের ব্যাপার”।

দেবব্রত দাসকে নিজের নার্সিং হোমে ঢুকতে দেবন না বলে পরিস্কার জানিয়ে দিলেও আরেক নার্সিং হোমের মালিক তাহের শেখ বলেন, “আমরা ভর্তি নেব না বলিনি। ওই রোগী ভর্তি না হয়ে কাগজপত্র নিয়ে চলে যান। এরপর আর আসেনি। আমরা রোগী ভর্তি নেব না বলিনি”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *