ভয়াবহ দুর্ঘটনা: বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠল গঙ্গার দুইপাড়, আহত ৫, পুলিশের গাড়িতে আগুন

আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ৯ জানুয়ারি: অপরিকল্পিতভাবে বাজি নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটল নৈহাটিতে। কেঁপে উঠল কাঁচড়াপাড়া থেকে শ্যামনগর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা। তীব্র বিষফোরণের সময় দুই শিশুসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দু’জন পুলিশ কর্মী এবং একজন বৃদ্ধ রয়েছেন। বিস্ফোরণের শব্দে আশেপাশের বাড়ির কেঁপে ওঠে। জানালার কাঁচ ভেঙ্গে যায় বেশকিছু বাড়ির। আশেপাশের অনেক ঝুপড়ি ঘর ভেঙ্গে যায়। শুধু তাই নয়, গঙ্গার ওপারেও বেশকিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির গৌরীপুর এলাকায়। এরপর ক্ষিপ্ত জনতা পুলিশকে ঘিরে ধরে হেনস্থা করে, তাদের মারধর করে বলে অভিযোগ এবং তারা পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

সম্প্রতি নৈহাটির দেবকের মামুদপুরে একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। তাতে পাঁচজন মারা গিয়েছিলেন। ওই বাজি কারখানায় তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর বাজি বাজেয়াপ্ত করে নৈহাটি থানার পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা ওই বাজিই বৃহস্পতিবার রামঘাটের গঙ্গার পাশে নিষ্ক্রিয় করার কাজ চলছিল। গর্ত করে তার ভিতরে বাজি রেখে নিষ্ক্রিয় করার সময় প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয়। কেঁপে ওঠে রামঘাট লাগোয়া বেশ কয়েকটি বাড়ি। ভেঙে পড়ে কাঁচের জানলা, দরজা। এছাড়াও রামঘাটের ওপারে অবস্থিত চুঁচুড়ার বেশ কয়েকটি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বাজি নিষ্ক্রিয় করার সময় পুলিশের এই কাজ দেখার জন্য সেখানে প্রচুর উৎসাহী মানুষের ভিড় জমে। তাদের ভেতরে অনেক শিশুও ছিল। দুর্ঘটনায় দুই শিশু এবং এক বৃদ্ধ আহত হয়েছেন। এছাড়া দুই পুলিশ কর্মীও আহত হয়েছেন।

তীব্র শব্দে বিস্তীর্ণ এলাকা। অতঙ্কিত হয়ে এলাকার মানুষ ছোটাছুটি শুরু করে। ঘটনাস্থলে প্রচুর মানুষ জড়ো হন। বোমা নিষ্ক্রিয়করণের পদ্ধতি নিয়ে ক্ষুব্ধ হন স্থানীয়রা। পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বচসা বেঁধে যায় দু’পক্ষের। তারপরই পরপর দু’টি পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

অপরিকল্পিতভাবে জনবহুল স্থানে কেন ওই বাজিগুলি নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন স্থানীয়রা। যদিও পুলিশের দাবি, তাঁরা বুঝতে পারেননি বাজেয়াপ্ত হওয়া বাজি এত শক্তিশালী। উল্লেখ্য, এর আগে নৈহাটির বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের সময়ই বাজির তীব্রতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং দাবি করেছিলেন, কারখানায় মামুলি বাজি নয় তৈরি হচ্ছিল অতি শক্তিশালী বোমা। কীভাবে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে কারখানা চলছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়েও এমন বিপত্তির ঘটনায় আবারও জোরাল হল সেই তত্ত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *