আমাদের ভারত, কলকাতা, ১৩ সেপ্টেম্বর: আগামী ১৪ এবং ১৫ সেপ্টেম্বর সহকার ভারতী, পশ্চিমবঙ্গ শাখার ৩য় রাজ্য অধিবেশন কলকাতার বিধাননগরে অনুষ্ঠিত হবে। দু’দিনের অনুষ্ঠান হবে পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতি কেন্দ্রে (ইজেডসিসি)।
প্রতি তিন বছর অন্তর এই অধিবেশনের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলা থেকে সহকার ভারতীর সভ্য ও সদস্য সমবায় এবং সমবায়ীদের উপস্থিতে বিগত কার্যকরী কাজের মূল্যায়ন এবং রাজ্যে, দেশ ও বিশ্বের সমবায়ের পরিস্থিতির পর্যালোচনা, আগামী দিনে সমবায় উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি এবং নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কার্যকরী কমিটি তৈরি হবে।
অধিবেশনের প্রথম দিন জেলার ও রাজ্যের বিশিষ্ট কার্যকরতাগণ, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যকর্তা ও প্রতিনিধিগণ, প্রায় চার শতাধিক সভ্য, সদস্য ও বিশেষ আমন্ত্রিতরা উপস্থিত থাকবেন। দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ, দুপুর ১.৩০ মিনিটে, অধিবেশনের উন্মুক্ত সত্রে, সকল সমবায়ের প্রতিনিধি, সমবায়ী ও সর্বসাধারণ আমন্ত্রিত থাকবেন। উপস্থিত থাকবেন রাজ্যপাল, কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক উন্নয়ন মন্ত্রী, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও উত্তরপূর্ব উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী, সমবায় উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সরকারি দপ্তরে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা, সহকার ভারতীর নতুন প্রদেশ
কার্যকারিনি, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।
“বিনা সংস্কার নাহি সহকার, বিনা সহকার নাহি উদ্ধার”— এই আপ্তবাক্যকে অঙ্গীকার করে ১৯৭৮ সাল ভারতের সমবায় আন্দোলনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সহকার ভারতীর পথ চলা শুরু। স্থাপনা কাল থেকেই আসমুদ্র হিমাচলের প্রতিটি কোণায় সমবায়ের প্রাসঙ্গিকতা, প্রয়োজন, প্রয়োগ ও প্রয়াসের দ্বারা রাষ্ট্র নির্মাণ ও সমাজের উন্নয়ন সাধনে নিবেদিত।দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সমবায়ী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সচেতনতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে আসছে।
সহকার ভারতীর মিশন হলো সমবায়ের মাধ্যমে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন করা। সংগঠনটি জনগণের মধ্যে সমবায়ের প্রাসঙ্গিকতা ও গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে চায় এবং তাদের স্বনির্ভরতা ও আত্মনির্ভরতার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
সহকার ভারতীর লক্ষ্য হলো একটি সমৃদ্ধ, স্বনির্ভর ও সামাজিকভাবে অন্তর্ভুক্ত সমাজ গঠন করা, যেখানে প্রতিটি ব্যক্তি সমবায়ের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হতে পারে এবং সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে পারে।
সহকার ভারতীর সাড়ে চার দশকের নিরন্তর আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে আজ ভারত সরকারের সমবায় মন্ত্রক গঠন করা হয়েছে, নতুন সমবায় নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, এবং সমবায়ের মাধ্যমে সকল রাষ্ট্রবাসীকে সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে সামিল করার জন্য ‘সহকারিতা সে সমৃদ্ধি” ডাক দেওয়া হয়েছে।
সমবায়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ প্রকল্প নিতে উদ্যোগী হয়েছে ভারত সরকার। বিভিন্ন রাজ্যও সহকার ভারতীর প্রয়াসকে স্বীকৃতি দিয়েছে। রাজ্য সরকারগুলি সমবায়ের মাধ্যমে সমাজের উন্নতি সাধনের জন্য সহকার ভারতীর পরামর্শ নিয়ে থাকে।
বিগত দু’ দশক যাবৎ সহকার ভারতীর পশ্চিমবঙ্গ শাখার কাজের মাধ্যমে আজ সমবায়, সমবায়ী, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, এফপিও/এফপিসি এবং বহু সমবায় বান্ধব মানুষ এই সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়েছেন। তাদের প্রয়োজন, প্রশিক্ষণ, সমস্যার সমাধান, আত্মনির্ভরতায় উৎসাহ প্রদান এবং সর্বদা তাদের পাশে থাকার প্রাথমিক অঙ্গীকারকে নিষ্ঠার সাথে পালন করে চলেছে।
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বাত্মক আর্থ-সামাজিক অন্তর্ভুক্তিকরণের উদ্দেশ্যে, রাষ্ট্রে সমৃদ্ধি এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সহযোগিতার বাতাবরণ তৈরির জন্য, দায়িত্ববান দক্ষ নাগরিক গঠন এবং সমাজের জন্য নীতি নির্ধারকদের অযাচিত ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর সহকার ভারতীর পশ্চিমবঙ্গ শাখা।
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষিত জনগণ, বিশেষ করে আস্থা ও আদর্শ স্থাপনকারী মধ্যবিত্ত সমাজকে রাষ্ট্র নির্মাণে সংস্কার, পারস্পরি, সহযোগিতা ও সম্প্রীতির এই সর্বব্যাপী ও সর্বস্পর্শী সমবায় আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।