আমাদের ভারত, কলকাতা, ৪ এপ্রিল: বন্ধ্যাত্বের যাবতীয় অত্যাধুনিক চিকিৎসা নিয়ে ১১ এপ্রিল থেকে ৩ দিনের এক আলোচনাচক্র হবে কলকাতায়।
‘ইস্ট ইন্ডিয়া ফার্টিলিটি কনক্লেভ, ২০২৫’ নামে এই সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন অংশের কিছু নামী চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ অংশ নিয়ে তাঁদের গবেষণা ও অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেবেন। এর উদ্যোক্তা ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাকশন (আইসার) – এর পশ্চিমবঙ্গ শাখা।
শুক্রবার এ কথা জানালেন আইসার-বেঙ্গল এর চেয়ারপার্সন বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ ডা: সুদীপ বসু। তিনি জানান, সম্মেলনে নারী পুরুষ দুজনেরই বন্ধ্যাত্বের কারণ বিশ্লেষণ করা হবে। অত্যাধুনিক পেলভিক আলট্রাসাউন্ড, ফার্টিলিটি স্ক্যান, থ্রি-ডি টুলস, ওভারিয়ান প্যাথলজি সহ অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষা সম্পর্কে সবিস্তার আলোচনায় অনেক নতুন নতুন তথ্য উঠে আসবে। যা আগামী দিনে সন্তান ইচ্ছুক দম্পতিকে আশার আলো দেখাবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, জনসংখ্যার বিচারে ভারতবর্ষ একেবারে সামনের সারিতে হলেও এখানে সন্তানহীন দম্পতির সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এদেশের ২ কোটি ৭৫ লক্ষ দম্পতি বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছেন। অন্যদিকে আমাদের রাজ্যে বাচ্চার জন্মের হার দেশের অন্যান্য অংশের তুলনায় অনেক কম। বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সমস্যার মোকাবিলা করতে পারে অনায়াসেই।
ডা: দিব্যেন্দু ব্যানার্জি জানান, সন্তানহীন দম্পতির জেনেটিক কোড বিশ্লেষণ করে বন্ধ্যাত্বের সুনির্দিষ্ট কারণ জানা গেলে চিকিৎসায় ভাল ফল আশা করা যাবে। ডা: সুপর্ণা ভট্টাচার্য এবং ডা: ঐন্দ্রী সান্যাল জানান, আইভিএফ পদ্ধতিতে ভ্রূণ উৎপাদনের পরে হবু মায়ের শরীরে নানান সমস্যা দেখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ এবং যথযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে। বিষয়টি নিয়ে আলোকপাত করবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
ক্যান্সারের চিকিৎসা করালে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ভ্রূণ সৃষ্টিতে সমস্যা হয়, এক্ষেত্রে ফার্টিলিটি প্রিজার্ভেশন সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি। কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপির আগে ডিম্বাণু / শুক্রাণু সংগ্রহ করে হিমায়িত করে রাখলে পরবর্তী কালে আইভিএফ- এর সাহায্যে সন্তান উৎপাদন অনেক সহজ হয়, জানালেন ডা: সুপর্ণা ব্যানার্জি।
অতি সম্প্রতি বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় এআই–এর ব্যবহার এবং সন্তান ধারণ সুগম করতে প্রোবায়োটিক ব্যবহার নিয়ে নতুন গবেষণা আগামী দিনে সন্তানাকাঙ্খী দম্পতির কাছে আশার আলো আনবে বলে জানান ডা: সুজয় দাসগুপ্ত ও ডা: পরাগ নন্দী।
আইভিএফ-এর খরচ মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় অনেকের সন্তানের আকাঙ্খা পূরণ হয় না। ন্যায্য মূল্যে আইভিএফ চিকিৎসার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে বললেন ডা: এস এম রহমান। আশা করা যায় আগামী দিনে সন্তানহীন দম্পতির মুখে হাসি ফোটাতে এই সব আলোচনা এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।