পার্থ খাঁড়া, আমাঈদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ সেপ্টেম্বর: অবশেষে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের পূর্ণ সহযোগিতায় পথে পথে ভিক্ষা করার দিন শেষ হল। তার সঙ্গে শেষ হলো বৃদ্ধাশ্রমে থাকার দিনও।
সম্পত্তির লোভে অশীতিপর বৃদ্ধাকে ছেলে- বৌমা, নাতি- নাতনিরা চূড়ান্তভাবে নির্যাতন করত। অবশেষে ওই বৃদ্ধাকে বাড়ি থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্য তাকে পথে পথে ভিক্ষাবৃত্তি করতে হয়। জানাগেছে, ওই বৃদ্ধার নাম গিরিবালা প্রধান। বাড়ি সবং ব্লকের রসুনচক গ্রামে। অভিযোগ, দুই ছেলে, দুই বৌমা ও নাতি নাতনিদের নিয়ে রসুনচক গ্রামে থাকতেন ওই বৃদ্ধা। ২০১২ সালে ভুল বুঝিয়ে লেখাপড়া না জানার সুযোগ নিয়ে তার নিজের ছেলেরা তাদের নিজেদের নামে করে নেন সমস্ত সম্পত্তি। পাশাপাশি স্বামী তাঁর জীবদ্দশায় স্ত্রী গিরিবালার নামে হারনান-রুইনান সমবায় সমিতি স্বয়ং শাখায় পাঁচ লক্ষ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে যান। অভিযোগ, ওই টাকা তুলে না দেওয়ায় গিরিবালা প্রধানের উপর চুড়ান্ত অত্যাচার শুরু হয়। গ্রামের পাঁচজনের সালিসিতে এই সমস্যার সমাধান না হওয়ায় বৃদ্ধাকে তার ছেলেরা জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বিষয়টি জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের স্বয়ং ব্লকের আইনি সহায়ক অরুণ কুমার জানার নজরে এলে তিনি ওই বৃদ্ধাকে কর্তৃপক্ষের অফিসে নিয়ে আসেন। সিভিল জজ (সিনিয়র ডিভিশন) কাম সচিব দিব্যেন্দু নাথ বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে একটি প্রিলিটিগেশন কেস শুরু করার আদেশ দেন। কিন্তু বিবাদিরা কেউ না উপস্থিত হলে বাধ্য হয়ে ওই
অভিযোগটির প্রেক্ষিতে বিনামূল্যে উকিলবাবু দেওয়ার জন্য দিব্যেন্দুবাবু আদেশ দেন। অঙ্কুর কর্মকার নামের একজন উলিলবাবুকে মামলাটি পরিচালনার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, এই রায়’তে বলা হয়েছে, প্রত্যেক ছেলেকে ৫০০০ টাকা করে মেন্টেনেন্স খরচ হিসেবে ওই বৃদ্ধাকে দিতে হবে। পাশাপাশি তিন লক্ষ টাকা ওনাকে দিতে হবে, আগামী দিনে যাতে সেই টাকা পেয়ে উপকৃত হয় ওই বৃদ্ধা তার জন্য সর্বদাই পাশে রয়েছে জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সদস্যরা।অঙ্কুরবাবু মামলাটি জে এম ৫ম কোর্ট পশ্চিম মেদিনীপুরে পরিচালনার পর গত ২৭ আগস্ট বিচারক রায় ঘোষণা করেন। গিরিবালা প্রধান তাঁর পাশে থেকে পূর্ণ সহযোগিতা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বলে আইনি সহায়ক কাজী মহম্মদ মুর্তজা জানিয়েছেন।