আমাদের ভারত, ২৯ এপ্রিল: শরীরটা তেমন ভালো নেই। পেটটা গোলমাল করছে। রোজ অ্যাসিডিটি হচ্ছে। গলা খুসখুস করছে। গায়ে, হাতে, পায়ে খুব ব্যথা। তাহলে কি একবার ডাক্তারবাবুর কাছে যাবো? হ্যাঁ এই রকম অনেক কিছু হলেই ডাক্তারের কাছে যাব কি যাব না, তা নিয়ে ভাবতে বসেন সাধারণ মানুষ। কারণ ডাক্তারের কাছে গেলেই গুনতে হবে মোটা দাগের ফি। যা ডাক্তারবাবুদের পারিশ্রমিক বলে দাবি করা হয়।
কোনো ডাক্তারবাবু হয়তো দেখেন ৫০০ টাকার বিনিময়ে, কেউবা হয়তো দেখেন হাজার টাকার বিনিময়ে। এই মূল্যবৃদ্ধির বাজারে প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চিকিৎসকের পারিশ্রমিক। শহরে এমনও অনেক চিকিৎসক রয়েছেন যারা একবার চেক আপের জন্য চার থেকে পাঁচ হাজার টাকাও ফি নিয়ে থাকেন। আর এর ফলেই চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে খেয়ে ফেলাটাকে অনেকটাই সহজ অসুখ মুক্তির পথ বলে মনে করেছেন মানুষ। কিন্তু এবার এটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে একেবারে দেশের শীর্ষ আদালতে।
একাধিক পিটিশনের শুনানি চলাকালীন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে প্রশ্ন উঠেছে, এটা কেমন হয় যদি বেসরকারি হাসপাতালে বা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করা ডাক্তারবাবুর ফি দেশজুড়ে একই রাখা হয়। ২০১০ সালের ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট আইন এবং ২০১২ সালের ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট আইনের একাধিক ধারার উপর শুনানি চলছিল সোমবার। যার ৯ ধারায় রয়েছে হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে বিভিন্ন পরিষেবার দাম বা চিকিৎসককে দেখানোর ফি প্রদর্শন করতে হবে। সেই মূল্য কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে কথা বলে ঠিক করতে পারে। এর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল একাধিক চিকিৎসক সংগঠন।
যেমন চক্ষু চিকিৎসকদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া এপথোলমোলজিক্যাল সোসাইটি এমন একটা ধারার বিরুদ্ধে মামলা করে। যাতে বলা ছিল সারা দেশে চোখের অস্ত্রপোচারের জন্য একই রকম চার্জ রাখা হবে। তাদের প্রশ্ন এটা কি আদো সম্ভব?
বিচারপতি বি আর গাভাই শুনানির মাঝে পাল্টা প্রশ্ন করেন এটা কি আদৌ করা যায়? কাল যদি সরকার বলে এই ঘরে থাকা সমস্ত আইনজীবীদের একই রকম পারিশ্রমিক ধার্য করা হবে, তখন আপনারা কী করবেন? আইনজীবীদের একাংশের আকাশ ছোঁয়া ফি নিয়ে কার্যত প্রায়ই গুঞ্জন ওঠে। বিচারপতি অবশ্য পরে যোগ করেন এগুলো বাজারের চাহিদার ওপর নির্ভর করে। কিন্তু কোনো চিকিৎসক ১০ হাজার টাকা ধার্য করতে পারেন, কেউ ৫ হাজার টাকা।
পরে বলিষ্ঠ আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে বলেন, “আমি এই ৯ ধারার সবকটা শব্দ খুঁটিয়ে পড়েছি। এই আইনের প্রশাসনের হাতে এরকম ক্ষমতা দেওয়ার কোনো কথাই বলা নেই। এগুলো নিয়ে বিতর্ক বাদ রাখা হোক।” আদালত অবশ্য এই নিয়ে কোন রায় এখনও দেয়নি। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছে।