আমাদের ভারত, ৫ এপ্রিল: এই রাজ্যে লোকসভা ভোটের প্রস্তুতির জন্য পঞ্চায়েত নির্বাচনের অভিজ্ঞতাকে মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহার করছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের সময় কোনো কোনো এলাকার কত বুথে স্বীকৃত কোনো জাতীয় দলের একজনও নির্বাচনী এজেন্ট ছিল না, এবার সেই তথ্য জেলা শাসকদের কাছে চেয়ে পাঠালো রাজ্যে নিয়োজিত বিশেষ সাধারণ পর্যবেক্ষক আলোক সিনহা।
অন্যদিকে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, খুব অল্প সময়ে এই কাজটি করা কঠিন। এই রাজ্যে উল্লেখযোগ্য জাতীয় রাজনৈতিক দলের মধ্যে রয়েছে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিআইএম। রাজ্যে শাসক দল তৃণমূল সহ বাকিদের জাতীয় দলের তকমা নেই। কমিশন আসলে জানতে চেয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের সময় কতগুলি বুথে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম, আপ, বিএসপি তথা বিরোধীদের কোনো নির্বাচনী এজেন্ট ছিল না।
কিন্তু জেলা কর্তারা জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় কয়েক হাজার করে বুথ হয়। ফলে সেখান থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা অনেকটা খড়ের গাদা থেকে ছুঁচ খোঁজার মতো। এই তথ্য পাওয়া যেতে পারে প্রিসাইডিং অফিসারের ডায়েরি থেকে। কিন্তু তা বার করে খতিয়ে দেখা যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ বিষয়।
তবে শুধুমাত্র একজনই এজেন্ট কোন বুথে ছিলেন সেটা বলা তুলনামূলক সহজ। কারণ সেটা স্ক্রুটনি তথ্য থেকেই পাওয়া যেতে পারে।
কিন্তু কেন এমন তথ্য চাইছে কমিশন? ২০১৮ এবং ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা, ভোটলুট, কারচুপি, ব্যালট নষ্ট সহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে। মনোনয়ন জমা না দিতে দেওয়া এবং তার ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়ের উদাহরণও কম ছিল না। হিংসা ও সন্ত্রাসের ঘটনা যেখানে যেখানে হয়েছিল সেখানকার তথ্য আগে চেয়েছিল কমিশন। এজেন্ট না থাকার মাধ্যমে কোথায় রাজনৈতিক উপদ্রব বেশি তা বুঝতে চাইছে কমিশন বলে মনে করছেন অনেকে।
এদিকে খুব তাড়াতাড়ি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরীর কাজ শুরু হবে। তার আগে সবদিক খতিয়ে দেখতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। পুননির্বাচন কোথায় কোথায় হয়েছিল সেটাও জানতে চেয়েছে কমিশন। পঞ্চায়েত ভোট পুরোপুরি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অধীনে হয়েছিল। বিধানসভা, লোকসভা ভোট হয় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে। তবু পঞ্চায়েত ভোটের বিভিন্ন ঘটনাকে কমিশন কেন মানদন্ড করতে চলেছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস।
অভিজ্ঞ আধিকারিকদের মতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে বারবার সরব হচ্ছেন বিরোধীরা। লোকসভায় প্রস্তুতি বৈঠকে পঞ্চায়েত ভোটের নানা ঘটনা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সামনে তুলে ধরেছিলেন তারা। সম্ভবত সেই কারণেই তারা বুঝতে চাইছেন নিয়ন্ত্রণ শিথিল থাকলে কোথায় কী ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।