জঙ্গলমহলে আমরা জিতব: শুভেন্দু 

আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ২৭ জানুয়ারি: জঙ্গলমহলের সমস্ত আসনে জিতে আমরা রাজ্যে সরকার গড়বো বলে শপথ নিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার ঝাড়গ্রামের সার্কাস ময়দানে অনুষ্ঠিত বিজেপির যোগদান মেলা ও সমাবেশে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, জঙ্গলমহলে ক্ষমতা দখলের জন্য বিগত দিনে বিজেপি কর্মী ও নেতাদের উপর অনেক অন্যায় করা হয়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী অপহরণ থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় ব্যাপক বাধা দেওয়া হয়েছিল। গণনায় কারচুপি করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিজেপিকে। তখন মানুষের জনমত প্রতিফলিত হয়নি। সেই সমস্ত মানুষ লোকসভা নির্বাচনে জবাব দিয়েছে তৃণমূলকে। এরপর অপেক্ষায় আছেন বিধানসভা নির্বাচনের। ক্ষমতা লাভের পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহলের জন্য যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই সমস্ত প্রতিশ্রুতি তিনি রাখতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু অধিকারী।

তিনি বলেন, তৃণমূল প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি থেকে আমি চলে এসেছি অনেক অসম্মান নিয়ে। সেখানে আমি সহকর্মী হিসেবে থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু তারা তা না করে কর্মচারি হিসেবে কাজ করিয়েছে। সেজন্য সম্মানের সঙ্গে দল করতে বিজেপিতে এসেছি। শুভেন্দু বলেন, এ রাজ্যে সমস্ত রকম উন্নয়নের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে। জঙ্গলমহলের প্রতিটি মানুষ শোষিত হয়েছে। তৃণমূল নেতারা আগে ভাঙ্গা সাইকেলে চাপতো, একটা বিড়ি তিনবার খেত। এখন তারা স্করপিও গাড়িতে চড়ছে। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে জঙ্গলমহলের খারাপ ফল হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেছিলেন এরকম হল কেন? তখন তাকে বলেছিলাম আপনি সামাজিক অডিট করুন দেখবেন কেন্দ্র সরকার যে শৌচালয় করার টাকা দিয়েছিল সেই সমস্ত টাকা মেরে দিয়েছে তৃণমূলের নেতারা। এরকম ঘর বাড়ি তৈরি করার ক্ষেত্রেও হয়েছে। প্রতিটি ঘর তৈরি করার ক্ষেত্রে কুড়ি হাজার টাকা করে কাটমানি খেয়েছে নেতারা। এইজন্যই জঙ্গলমহলে ফল খারাপ হয়েছে। শুভেন্দু অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের দেওয়া চাল-গম এখানে খাদ্যসাথী বলে চালানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাকে বাংলা আবাস যোজনা বলে চালানো হচ্ছে। এভাবে কেন্দ্রের প্রতিটি প্রকল্পকে নিজেদের বলে দাবি করছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, মানুষ জেনে গেছে মিথ্যা কথার একটা সীমা থাকে। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রতিনিয়ত মিথ্যা বলে যাচ্ছেন।

শুভেন্দু বলেন, বর্তমানে তৃণমূল খাটে উঠে গেছে আর কিছুদিনের মধ্যে তাদের শ্মশান ঘাটে যেতে হবে। ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে তৃণমূলকে। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, সাঁওতালি ভাষার মর্যাদা দিয়েছিলেন অটল বিহারি বাজপেয়ি আর এখানে দিদি বলছেন আমরা করে দিলাম আমরা করে দিলাম। রাজ্যের কোনও স্কুলে প্রয়োজনমতো শিক্ষক নেই। কারণ, কোনও ক্ষেত্রে কোনও নিয়োগ নেই। শুধু ধোকা দিয়ে চলেছেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করে বলেন, জঙ্গলমহলে তৃণমূলের যিনি মুখ হয়েছেন সেই ছত্রধর মাহাতো ১০ বছর জেল খেটেছেন। জেলার মানুষের মনে আছে রাতের অন্ধকারে মাইলের পর মাইল জোর করে গ্রামের গৃহবধূ থেকে শুরু করে সবাইকে মিছেলে হাঁটতে বাধ্য করেছে। অত্যাচার করা হয়েছে এলাকার মানুষের সঙ্গে। ২৭ দিন সব বন্ধ রেখে মানুষের জনজীবন অচল করে ফেলেছিল ছত্রধর মাহাতো। তিনি এখন সরকারের সমস্ত সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। মানুষ তার সমস্ত কিছুই বিচার করবেন বিধানসভা নির্বাচনে। আমরা সেই নির্বাচনে জিতবো। আমরা পশ্চিমবাংলায় বিজেপি সরকার গঠন করে মোদিজীর হাতে তুলে দেব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *