Sukanta, BJP, মুখ্যমন্ত্রীর জিহাদি সরকারের শেষ দেখে ছাড়ব! ট্রেনে হিন্দু তরুণীর অজান্তে মুসলিম প্রৌঢ়ের অশ্লীল ভিডিও করার ঘটনায় গর্জে উঠলেন সুকান্ত

আমাদের ভারত, ৯ মার্চ: বালুরঘাট- নবদ্বীপ ট্রেনে এক তরুণীর অজান্তে তার অবাঞ্ছিত ভিডিও করছিলেন এক মুসলিম প্রৌঢ়। তরুণী তার প্রতিবাদ করার পর থেকেই তাকে হেনস্থা হতে হচ্ছে। আর তাকে ঘিরে সরগরম হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি ওই তরুণীর পক্ষের দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

বালুরঘাটে নবদ্বীপ এক্সপ্রেসে শুক্রবার এক হিন্দু তরুণীর অশ্লীল ভিডিও করে এক মুসলিম প্রৌঢ় বলে অভিযোগ। সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে ওই হিন্দু তরুণী। কিন্তু তারপর থেকেই ওই হিন্দু তরুণী ও তার পরিবারকে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে, ওই তরুণী কলেজের ফার্স্ট ইয়ারের পরীক্ষা পর্যন্ত দিতে পারেনি। রাজ্যের শাসক দলের একাধিক সংখ্যালঘু নেতা, বিধায়ক অভিযুক্ত ওই মুসলিম প্রৌঢ়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু বিজেপির তরফে এই হিন্দু তরুণীকে সার্বিক সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি ফোনে কথা বলেছেন ওই তরুণীর সঙ্গে।

সুকান্ত মজুমদার ফোনে তার সঙ্গে কথা বলেন এই তরুণী। তাকে জানান সে ইংলিশ অনার্সের ফাস্ট ইয়ারের ছাত্রী। এত হুমকির মুখে পড়ে তিনি পরীক্ষা দিতে যেতে পারেনি। নিরাপত্তার অভাবে সে যেতে পারেনি পরীক্ষা দিতে। তার বাসস্থান এলাকায় মানুষকে তার সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়িয়ে তার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা হয়েছে। সুকান্তবাবুকে সে জানায়, সে পরীক্ষা দিতে চায় তার জন্য তার নিরাপত্তার প্রয়োজন। তাতে সুকান্ত মজুমদার তাকে পরামর্শ দেন, জেলা পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে সব ঘটনা জানিয়ে দরখাস্ত করার। মেয়েটি জানান তাকে ও তার পরিবারের লোকজনকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। সুকান্ত মজুমদার আশ্বাস দিয়ে বলেন, “আমরা বিষয়টা দেখছি আপনার কিছু হলে গোটা রাজ্যে আগুন জ্বলবে। চিন্তার কিছু নেই।”

এদিকে অভিযুক্ত ওই প্রৌঢ়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন
ফারাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলাম, মহম্মদ জিন নামাজ, তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের নেতা অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ শেখ, মালদা জেলা জমিয়তে উলেমার সভাপতি হাফেজ নুরুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা। এই মহম্মদ বিন নেওয়াজ ওই তরুণীর নাম ঠিকানা প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। তার পর থেকেই ওই তরুণীর নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে। মহম্মদ বিন নেওয়াজের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন মহল থেকে একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তৃণমূল বিধায়কের তরুণীকে অপরাধী সাজিয়ে বিষয়টি সাম্প্রদায়িক ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই ঘটনায় সুকান্ত মজুমদার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টও করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে এই ঘটনায় পদক্ষেপ করার দাবি জানান তিনি। যদি ওই হিন্দু তরুণীর বা তার পরিবারের কোনো সদস্যের কোনো ক্ষতি হয় তাহলে রাজ্যে আগুন জ্বলবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন বাংলার মানুষ দেখল বাংলার একটি মেয়ে তার প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিতে পারল না। কারণ কয়েকদিন আগে বালুরঘাট- নবদ্বীপ ট্রেনে তার অজান্তে তার ছবি তোলার জন্য এক মুসলিম প্রৌঢ়র বিরুদ্ধে সরব হয়। ঘটনার প্রতিবাদ করতে সেই ব্যক্তির গালে তরুণী সপাটে চড় মারে এবং বকাঝকা করে। কিন্তু সেই অপরাধে তাকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয় এবং তার পরিবারকে কেটে ভাগীরথীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এই হুমকির মুখে পড়ে সেই মেয়েটি পরীক্ষা দিতে পারেনি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি প্রশ্ন তোলেন, আমরা কোন বাংলায় আছি? কী দোষ ছিল মেয়েটির ল? একজন তার শরীরের নানা অংশের অশ্লীলভাবে ভিডিও করছিল তার প্রতিবাদ করেছিল সে। যে অপরাধী সে শুধু মুসলিম বলে পুরো পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রদায়িক উগ্র মানসিকতার মানুষ তার পাশে দাঁড়ালো এবং মেয়েটিকে তার পরিবার শুদ্ধ শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হল। মেয়েটি পরীক্ষা দিতে পারেনি, পরের পরীক্ষাগুলো সে দিতে পারবে কিনা সেটাও জানা নেই।

সুকান্ত মজুমদার আশঙ্কার সুরে বলেন, “আমি বাঙালি হিন্দুদের ভাবতে বলছি। আপনার ঘরের মেয়েদের সাথে এই ঘটনা ঘটতেই পারে। একটি মেয়ের সঙ্গে ঘটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য যদি সে পরীক্ষা দিতে না পারে তাহলে আগামী দিনে আপনার মেয়ে যদি ট্রেনে- বাসে- ট্রামে এই ধরনের অপরাধ বা অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয় তাহলে প্রতিবাদ করতে পারবে তো? নাকি বিশেষ ধর্ম সম্প্রদায় দেখে প্রতিবাদ করবেন।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তার প্রশাসনকে বলতে চাই, মেয়েটির গায়ে যদি হাত পড়ে বা তার পরিবারের বিন্দুমাত্র কোনো ক্ষতি হয়, সমগ্র হিন্দু সমাজ পথে নামবে। মুখ্যমন্ত্রী তার জিহাদি সরকারের শেষ দেখে আমরা ছাড়বো।

একই সঙ্গে তিনি লিখেছেন, আবারও প্রমাণিত হলো যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে হিন্দু নারীদের জন্য বাংলা এক দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে! মমতার তোষণ রাজনীতির এটাই বাস্তবতা। হিন্দুরা ভয়ের মধ্যে বাস করে, অপরাধীরা মুক্তভাবে ঘুরে বেড়ায়, এবং প্রশাসন নীরব থাকে। বাংলা আর নারীদের জন্য নিরাপদ নয়। ঠিক যেমন বাংলাদেশে হিন্দু মেয়েদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে, হয়রানি করা হচ্ছে এবং হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেরুদণ্ডহীন শাসন এই অপরাধীদের নির্ভয়ে কাজ করতে দিয়েছে।

তিনি রাজ্যের মহিলাদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, আমরা বাংলার প্রতিটি মহিলাকে আশ্বস্ত করছি – বিজেপি আপনার সাথে দাঁড়িয়ে আছে! আমরা লড়াই করব, তৃণমূলের অনাচার দূর করা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। সন্ত্রাসের কাছে বাংলা মাথা নত করবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *