আমাদের ভারত, ৬ এপ্রিল: রামনবমী উপলক্ষে গেরুয়াময় হয়ে উঠেছে গোটা বাংলা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, অস্ত্র ছাড়া হাওড়ায় রামনবমীর মিছিল করতে হবে। সেই নির্দেশ মেনে অঞ্জনি পুত্রসেনা মিছিল আয়োজন করে। তাতে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি সংসদ সুকান্ত মজুমদার। সেখানে বিরোধীদের হুংকার দিলেন তিনি, বলেন অতীতে যারা তাদের মিছিলে বাধা দিয়েছিল আজ তাদেরই বুকের ওপর দাঁড়িয়ে রামনবমী পালন করছেন তাঁরা।
সকাল থেকেই রাজ্যের নানা প্রান্তে রামনবমীর মিছিল বেরিয়েছে। বহু জায়গায় ধাতব অস্ত্রের সঙ্গে প্লাস্টিকের অস্ত্রও দেখা গেছে। গেরুয়া পতাকা ছিল অনেকের হাতে। সব মিলিয়ে রবিবার কার্যত গেরুয়া রঙে রঙিন হয়েছিল রাজ্য। বিভিন্ন জায়গার মতো হাওড়াতেও রামনবমীর মিছিল হয়। তাতে যোগ দিয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার। গত বছর এই অঞ্চলে মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটেছিল, সেই প্রসঙ্গ টেনেই তিনি বলেন, “গতবার আমাদের হিন্দুদের উপর পাথর ছোড়া হয়েছিল। আমাদের রাম ভক্তরা মার খেয়েছেন। লুটপাট হয়েছে। অথচ পুলিশ নিষ্ক্রিয় থেকেছে। আমি নিজে সেদিন এই এলাকায় ছিলাম। পুলিশ জানত কোথায় হামলা হতে পারে, তবু তারা কোনো আগাম ব্যবস্থা নেয়নি।” প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, তিন মিনিটের হাঁটা দূরত্বে সিপির দপ্তর। তবুও তিনি এলেন না। পুলিশের এই নিষ্ক্রিয়তায় তখন গোটা হিন্দু সমাজ যেন কোমায় চলে গিয়েছিল। কিন্তু আজ হিন্দুরা জেগেছে। প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছে। রামনবমীর শক্তিতে এটা সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পুলিশ আমাদের থামাতে চায়। আমরা দেশের আইন মেনেই চলি। আমরা শান্তিপ্রিয়। সংবিধান মানি। কিন্তু রামনবমী পালন করতে বাধা দিলে আমরা রুখে দাঁড়াবোই। যারা আমাদের রামনবমীতে পাথর ছুড়েছিল আজ তাদের বুকের ওপর দাঁড়িয়ে রামনবমী পালন করছি আমরা। আমাদের যারা বাধা দেবে, তাদের উচিত শিক্ষা এভাবেই দেওয়া হবে।”
শওকত মোল্লা, কুনাল ঘোষ শতাব্দী রায়, গৌতম দেব থেকে শুরু করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তৃণমূল নেতারা সকলে আজ রামনবমী পালন করেছেন। কেউ পুজো করেছেন, কেউবা মিছিলে হেঁটেছেন। আর তৃণমূলের নেতাদের এভাবে রামনবমী পালনকে কটাক্ষ করেছেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেছেন, ভোট ব্যাঙ্কের কারণেই রামনবমী পালন করতে হয়েছে শাসক শিবিরকে। এমনি সময় তো জয় শ্রীরাম স্লোগানেও তাদের সমস্যা হয়। তবে আমরা শুরু থেকেই হিন্দু। আমরা রামনবমী পালন করে আসছি। তাঁর কথায়, “আমি পাগল হিন্দু। যতদিন শরীরে শক্তি থাকবে প্রতি বছর রামনবমী পালন করব।”
কয়েকদিন ধরেই রাম নবমী নিয়ে চাপানউতোর চলেছে রাজ্যের শাসক দল ও বিরোধী দলের সদস্যদের মধ্যে। এই রামনবমী ঘিরে মিছিল করার অনুমতি নিয়ে পারদ-কম ওঠা নামা করেনি। এই পরিস্থিতিতে একাধিক শর্ত দিয়ে মিছিলের অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালাতে বিশাল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী রাখা হয়েছিল বিভিন্ন এলাকায়। সারা রাজ্যে প্রায় আড়াই হাজারেরও বেশি মিছিলের অনুমোদন ছিল। তারপরেও জেলায় জেলায় অনেক ছোট বড় মিছিল হয়েছে বলে জানাগেছে।