আন্ডারপাস নির্মাণের কাজ বন্ধ, ভোট বয়কটের পোস্টার বাঁকুড়ার একাধিক গ্রামে

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৯ ফেব্রুয়ারি: রেলের আন্ডারপাস নির্মাণ কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করার পর দীর্ঘ একবছরের বেশি সময় কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে আছে, এর ফলে প্রায় পঞ্চাশটির বেশি গ্ৰামের বাসিন্দারা নাকাল হচ্ছে রাস্তা পরাপার করতে না পেরে। এই ঘটনায় বাঁকুড়ার সানবাঁধা, বাঁকি, সেন্দড়া, আকুড়াবাদ, ভূতসশর সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এলাকার মানুষ ভোট বয়কটের ডাক তুলেছেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন স্হানে ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে পোস্টারও সাঁটা হয়েছে।এই নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু কে বা কারা এই পোস্টার দিয়েছে তা জানা নেই।

বাঁকুড়া শহরের শেষ প্রান্তে ময়রাবাঁধ এলাকায় দক্ষিণ- পূর্ব রেলের একটি আন্ডারপাস নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। গত বছর এই কাজ শুরু হতেই ময়রাবাঁধ এলাকার বাসিন্দারা প্রতিবাদ জানান। তাদের বক্তব্য, সোজাসুজি আন্ডারপাস নির্মাণ হলে এলাকার বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাদের এলাকা অনেকটাই নীচু হয়ে যাবে, রাস্তাও সংকীর্ণ হয়ে যাবে, এককথায় এলাকার চিত্রটাই পাল্টে যাবে। সেই কারণে আন্ডারপাস ইউটার্ন করে তৈরির আবেদন জানানো হয়। সরকারি স্তরে আবেদন জানানোর পর রেল দপ্তর, জেলা প্রশাসন, এলাকার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকও হয়। কিন্তু ইউটার্ন করার ক্ষেত্রে বহু সমস্যা তৈরী হবে বলে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়। এদিকে ময়রাবাঁধের আধিবাসীরাও জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়। যার ফলে কাজ শুরু করার পর তা বন্ধ হয়ে পড়ে। এদিকে রাস্তা গভীর ভাবে খুঁড়ে তার মাটি তুলে দেওয়ায় রাস্তায় চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। অনেকটা পথ ঘুরে বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষকে সদর শহরে আসতে হচ্ছে।কেননা শহর লাগোয়া এই সব গ্ৰামের অধিবাসীরা চিকিৎসা, শিক্ষা সহ সমস্ত কাজে শহরের উপর নির্ভরশীল।

ভোট বয়কটের পোস্টার নজরে আসতেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এলাকার বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘ একবছরের বেশি সময় ধরে তারা ভুগছেন। যেখানে দু- তিন কিমি রাস্তা পার হলেই শহর, সেখানে প্রায় দশ বারো মাইল ঘুরতে হচ্ছে। দিনের পর দিন তো এভাবে চলতে পারে না। প্রশাসনও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাই ভোট বয়কটের কথা উঠেছে। কিন্তু পোস্টার কারা দিয়েছে তা তাদের বোধগম্য নয়।

সেন্দড়া গ্ৰামের বাসিন্দা অর্ধেন্দু গুপ্ত বলেন, কিছু জায়গাতে পোস্টার পড়েছে বলে শুনেছি, কোনও সংগঠন বা সংস্হার নাম নেই বলে এলাকাবাসীদের তরফে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এলাকার মানুষের যা ক্ষোভ তাতে আরোও কোথাও পড়লে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু এতদিন ধরে কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে আছে, প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, রেল বিভাগ, জেলা প্রশাসন, এলাকার জন প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন গ্ৰামের মানুষদের নিয়ে বৈঠক করেন।বৈঠকে সিদ্ধান্ত মতোই কাজ শুরু হয়। তারপর কাজ থমকে গেল কেন? একই মত প্রকাশ করেন দেবদাস সিংহ।এলাকায় সমস্ত গ্ৰামের বাসিন্দারাও বেজায় ক্ষুব্ধ।তাদের বক্তব্য, আর কতদিন কষ্ট সহ্য করতে হবে?

বাঁকুড়ার সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার বলেন, আন্ডারপাস নির্মাণে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা নিরসনের জন্য আমি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রয়োজন হলে উচ্চতা একটু কমিয়ে দিয়ে যদি সমস্যা সমাধান করা যায় তা দেখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *