আমাদের ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ১৭ আগস্ট: সুন্দরবনের চামটার জঙ্গল লাগোয়া খালে কাঁকড়া ধরার সময় বাঘের হানায় গুরুতর জখম হলেন এক মৎস্যজীবী। শনিবার সকাল সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন গৌড় মণ্ডল নামে বছর পঞ্চাশের ঐ মৎস্যজীবী। বাঘের সাথে প্রায় দশ মিনিট লড়াই করে সঙ্গীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন মনোরঞ্জন মিস্ত্রী ও ঝন্টু মন্ডল। গৌড় বর্তমানে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গোসাবা ব্লকের ছোটমোল্লাখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিদাসপুর এলাকার বাসিন্দা তিন মৎস্যজীবী গত বুধবার কাঁকড়া ধরার জন্য রওনা দেন। শনিবার সকালে তাঁরা সুন্দরবনের চামটার জঙ্গল লাগোয়া খালে কাঁকড়া ধরার জন্য দোন ফেলছিলেন। ঝন্টু ও মনোরঞ্জন দোন ফেলতে ব্যস্ত ছিলেন, আর নৌকার পিছনে বসে দাঁড় বাইছিলেন গৌড়। আচমকাই জঙ্গলের মধ্য দিয়ে একটি বাঘ গৌড়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। টাল সামলাতে না পেরে গৌড়কে নিয়ে খালের জলে পড়ে যায়। প্রচন্ড ঝাঁকুনি অনুভূত হওয়ায় পিছন ফিরে ঝন্টু ও মনোরঞ্জন দেখেন গৌড়ের মাথা ও চোয়ালে থাবা বসিয়েছে বাঘ। সাথে সাথে তাঁরাও খালের জলে ঝাঁপ মেরে নৌকার বৈঠা ও বাঁশ নিয়ে বাঘের উপর হামলা শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই শিকার ছেড়ে দেয় দক্ষিণ রায়। তেড়ে যায় ঝন্টু ও মনোরঞ্জনের দিকে। কিন্তু দু’জনে লাঠিসোটা নিয়ে মারমুখি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত রণে ভঙ্গ দিয়ে জঙ্গলের মধ্যে গা ঢাকা দেয় বাঘ।
তারপর রক্তাক্ত অবস্থায় গৌড়কে উদ্ধার করে ছোটমোল্লাখালি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। তাঁর মাথার পিছনে ও ডান চোয়ালে গুরুতর ক্ষত হয়েছে। ঝন্টু ও মনোরঞ্জন বলেন, “আমরা কাঁকড়া ধরার জন্য দোন ফেলছিলাম। গৌড় নৌকার পিছনে বসে দাঁড় বাইছিল। আচমকাই ওঁর উপর বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখনই আমরা দু’জন লাঠি ও নৌকার বৈঠা নিয়ে বাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ি। শেষ পর্যন্ত বাঘকে পিটিয়ে সঙ্গীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসতে পেরেছি।”
এ বিষয়ে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, “একটা ঘটনার কথা শুনেছি, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঐ মৎস্যজীবীদের মাছ, কাঁকড়া ধরার অনুমতি ছিল কিনা সেটাও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”