চীনের হুবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও পড়তে যেতে পারছেন না রায়গঞ্জের বাসিন্দা ত্রিস্রোতা, প্রধান অন্তরায় করোনা ভাইরাস

আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ১৩ ফেব্রুয়ারি:
চীনের হুবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে পড়তে যেতে পারছেন না রায়গঞ্জ শহরের মিলনপাড়ার বাসিন্দা ত্রিস্রোতা ভৌমিক। উচ্চশিক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মারন ভাইরাস করোনা। শুধু ত্রিস্রোতাই নয় চীনের বিভিন্ন শহরে উচ্চশিক্ষার জন্য পড়াশোনায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলার বহু ছাত্রছাত্রীদের। কবে এই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমবে তারপর হয়তো চীনে পড়তে যেতে পারবে ত্রিস্রোতা। ১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া হুবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম। কিন্তু সেখানে যাওয়ার জন্য চলতি মাসে ভিসার প্রয়োজন। সেই ভিসাই আটকে দিয়েছে চীনা সরকার। ফলে অনিশ্চয়তার মুখে ত্রিস্রোতার উচ্চশিক্ষা।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলার ছাত্রী রায়গঞ্জ শহরের বাসিন্দা ত্রিস্রোতা জিওলজির ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি পাওয়ার পর পোস্ট ডক্টরেট করার জন্য চীনের হুবেই বিশ্ববিদ্যালয় অফ ইঞ্জিনিয়ারিংতে ভর্তি হয়েছেন। আগামী ১লা মার্চ থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর মিছিল শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পঠন পাঠন বন্ধ রেখেছে। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি শীতাবকাশের পরে খুললেও শুধুমাত্র অনলাইনেই পঠন পাঠন চলবে। চীনের রাজধানী বেজিংয়ের পাশের শহর হ্যান্ডন। এই হ্যান্ডন শহরটি হুবেই রাজ্যে অবস্থিত। গোটা চীন দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ হাজার ৬৩৮ জন। মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। ১ লক্ষ ৮৭ হাজার মানুষকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এমতাবস্থায় চীনেই হুবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়াটা প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে রায়গঞ্জের ত্রিস্রোতার। নিরাপত্তা ব্যাবস্থা বাড়ানোর পাশাপাশি বাইরের লোক ঢোকা নিষিদ্ধ করেছে চীন সরকার।

রায়গঞ্জের মিলনপাড়ার বাড়িতে বসে ত্রিস্রোতা জানাল, আগামী ১লা মার্চ থেকে আমার চীনের হুবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যক্রম শুরু হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমি ওয়ার্ক পারমিট পাচ্ছি না। চীনা সরকার এখনও আমার ভিসা অনুমোদন করেনি। বুঝতে পারছি না কবে থেকে কাজ শুরু করতে পারবো।

রায়গঞ্জের মিলনপাড়ার বাসিন্দা তীলকতীর্থ ভৌমিকের একমাত্র মেয়ে ত্রিস্রোতা ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্রী ছিল। রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে জিওলজিক্যাল সায়েন্স নিয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েট হন তিনি। এরপর জামসেদপুরের
আইআইটি আইএসএম থেকে কয়লার ওপর ডক্টরেট করেন ত্রিস্রোতা। এরপরই পোস্ট ডক্টরেট করার জন্য চীনের হুবেই বিশ্ববিদ্যালয় অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয়েছিলেন। আগামী ১ লা মার্চ থেকে পাঠ্যক্রম শুরু হবে। কিন্তু ত্রিস্রোতার এখন প্রধান অন্তরায় করোনা ভাইরাস। চীনে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ অবসানের প্রতীক্ষায় রায়গঞ্জের বাড়িতে বসে দিন গুনছেন তিনি। তবে আপাতত অনলাইনে হেবেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করার ভাবনা চিন্তা করছেন তিনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পাড়ি দেবেন চীনের হুবেইতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *