TMC meeting, eligible candidates, এসএসসি কাণ্ড! যোগ্য চাকরি প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠক তৃণমূলের, ঘুষের টাকা ফেরানোর হিসেব নিকেষের সভা বলে কটাক্ষ সিপিএমের

আমাদের ভারত, ২৮ এপ্রিল: গত সোমবার হাইকোর্টের রায়ে চাকরি হারা হয়েছেন ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী। এই ইস্যুতে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। প্রশ্ন উঠেছে অযোগ্যদের জন্য কেন যোগ্যদের চাকরি যাবে? আদালত তৃণমূল সরকারের কাছে যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীর তালিকা চাইলেও তা দেওয়া হয়নি। ফলে রায় ঘোষণার দিন আদালত জানায় বাধ্য হয়ে পুরো প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিচ্ছে ডিভিশন বেঞ্চ। সিবিআই এর তালিকা অনুযায়ী ৫ হাজার প্রার্থী অযোগ্য। সেটা ধরলে আদালতের রায়ে বিপাকে পড়েছেন প্রায় ২০ হাজারের বেশি যোগ্য চাকরি প্রার্থী। রবিবার সেইসব বরখাস্ত শিক্ষকদের নিয়ে দুর্গাপুরে নেপালিপাড়া হিন্দি হাই স্কুলে দুপুরে একটি সভা করে তৃণমূল শিক্ষা সেল। কিন্তু এই সভাকেই কটাক্ষ করে ঘুষের টাকা ফেরতের সভা বলে কটাক্ষ করেছে সিপিআইএম। একই সঙ্গে এই সভা ঘিরে নির্বাচনি বিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

ভোটের আচরণবিধি লাগু হবার পর কিভাবে সরকারি স্কুল ব্যবহার করে দলীয় কর্মসূচি হয় তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

এদিকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এতো জনের চাকরি বাতিলের জন্য বিচারপতিদের দায়ী করেন। তাঁর দাবি, ভবিষ্যতে ভালো পদ পাওয়ার লোভে নাকি বিচারপতিরা এই ধরণের রায় দিচ্ছেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথাও উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, এখন এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে যে বিচারকরা ভাবছেন, মানুষকে উত্তক্ত করে, বিজেপির পদলেহন করে তমলুকে দাঁড়ানো যায়। তেমনি অনেকে ভাবছেন রাজ্যপাল হবেন, রাজ্যসভার মেম্বার হবেন। যে ছেলে মেয়েগুলো পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিল, তাদের এভাবে উত্তক্ত করা, সন্ত্রস্ত করা, সমাজের পক্ষে একটা ভালো বার্তা গেছে বলে মনে হয় না। তিনি জানান, তারা সর্বতভাবে শিক্ষকদের সঙ্গে আছেন। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত শিক্ষক সমাজের প্রতি সহানুভূতিশীল।

তৃণমূল জেলা সভাপতি দাবি করেছেন, তারা যোগ্য প্রার্থীদের পাশে থাকবেন। কিন্তু কিভাবে তৃণমূল যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি ফেরাবেন তার নির্দিষ্ট কোনো রূপরেখা তুলে ধরতে পারেননি বলে মনে করছেন বিরোধীরা। ফলে এই সভাটিকে ঘুষের টাকা ফেরতের সভা বলেই দাবি করেছে সিপিআইএম। সিপিআইএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকারের দাবি, এই সভা আসলে কাদের কাদের টাকা ফেরত দিতে হবে সেই সব হিসেবে নিকেষ করার সভা ছিল। সিপিএম নেতা জানিয়েছেন, তাদের শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ যোগ্য চাকরি প্রার্থীদের পাশে আছে। সার্বিক ভাবে তাদের আইনি সহোযোগিতা করছে। ইতিমধ্যেই তারা বেশ কয়েকটি মামলাও দায়ের করেছেন।

যদিও তৃণমূলের দাবি, যোগ্য প্রার্থীদের জন্য আইনি লড়াইয়ের রূপরেখা তৈরির জন্য এই সভার আয়োজন করা হয়েছে। আইনজীবীরা কিভাবে কী করতে হবে ব্যাখা করেছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি নুরুল হক। কয়েক জন চাকরি হারা প্রার্থী এই সভা থেকে বেরিয়ে জানান, তারা কিছুটা আশাবাদী হলেও দুশ্চিন্তা তাদের কমেনি।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, চাকরি বাতিলের পর এই সভার আয়োজন করছে অথচ, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের পরেও যোগ্য অযোগ্যদের নামের তালিকা আদালতে জমা দেয়নি তৃণমূল সরকার। এই দ্বিচারিতা কেন? তালিকা জমা না দেওয়ার জন্যেই মূলত প্রায় ২০ হাজার যোগ্য শিক্ষক শিক্ষা কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। আবার সেই তৃণমূল কংগ্রেসই ভোটের আগে চাকরি হারাদের নতুন প্রতিশ্রুতিতে দিয়ে কাছে টানার চেষ্টা করছে। এখন দেখার, এই আশ্বাস চাকরি হারাদের কাছে কতটা ফলপ্রসূ হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *