TMC, Bankura, বাঁকুড়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল, গুলিবিদ্ধ বুথ সভাপতি, গ্রেফতার ১

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২ মার্চ: বিধানসভা ভোটের আগে দলনেত্রী দলীয় গোষ্ঠী কোন্দল ভুলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার পরামর্শ দিলেও তাকে তোয়াক্কা না করেই বাঁকুড়ায় গোষ্ঠী কোন্দলে জড়িয়ে পড়েছে কর্মীরা। বাঁকুড়ায় শাসক দল তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে চলল গুলিও। শনিবার বাঁকুড়ার সোনামুখীতে এই ঘটনা ঘটে। গুলিতে জখম হয়েছেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি নাসিম শেখ। তার পেটে গুলি লাগে। গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে যে, বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকের পিয়ারবেড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চকাই গ্রামে একটি পাকা নর্দমা করা নিয়ে বিবাদ বাধে তৃণমূলের স্থানীয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। এই বিবাদ নিয়ে শনিবার সকালে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এলাকা তপ্ত হয়ে ওঠে। বিকেলের দিকে তা চরমে ওঠে। দুই গোষ্ঠীর কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এই সময়ই তৃণমূলের সেকেন্দার খান নামের এক কর্মী আগ্নেয়াস্ত্র বার করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। অভিযোগ, সেকেন্দার খান ২ রাউন্ড গুলি চালায়। একটি গুলি লাগে তৃণমূলের চকাই গ্রামের বুথ সভাপতি নাসিম শেখের পেটে। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা প্রথমে সোনামুখী ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ বুথ সভাপতিকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়।

ওই বুথ সভাপতি নাসিম শেখ বলেন, ওরা বেআইনি ভাবে কাজ করছিল। তিনি সেই ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি কাজের কাগজপত্র দেখতে চেয়েছিলেন। এমনকি বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েতকে জানাবেন বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। তারপর থেকেই শুরু হয় বিবাদ। তাকে হুমকি দেওয়া হয়। তাকে দমাতে শেষে শনিবার গুলি চালানো হয়। দলেরই কিছু কর্মী তাকে উদ্দেশ্য করে গুলি চালিয়েছে। তবে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার প্রতিক্রিয়া মেলেনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গুলি চালানোর পরই দলের লোকজনই অভিযুক্তকে বেধড়ক মারধর করে। বর্তমানে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তিনিও ভর্তি হাসপাতালে।

বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা মুখপাত্র দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, সরকারি টাকা কে কত আত্মসাৎ করবে সেই নিয়েই ওদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার এখন ওই দলের মামুলি কাজ।

সোনামুখীর ঘটনায় পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম বকুল খান। সে মূল অভিযুক্ত সেকেন্দার খানের সহযোগী হিসাবে কাজ করেছিল। ধৃতকে রবিবার বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ। ঘটনার দিন রাতেই সেকেন্দার ও তার ৩ সহযোগীর বিরুদ্ধে সোনামুখী থানার হামলার অভিযোগ দায়ের করেন গুলিবিদ্ধ বুথ সভাপতি নাসিম শেখের ভাই। গুলি চালনোয় দলীয় কর্মীদের হাতেই গুরুতর জখম হয়ে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে মূল অভিযুক্ত সেকেন্দারও। পুলিশ গ্রেফতার করেছে সেকেন্দারের সহযোগী বকুল খানকে। ঘটনাস্থল থেকে ইতিমধ্যেই একটি ওয়ান শর্টার বন্দুক ও এক রাউন্ড কার্তুজের খোল উদ্ধার করেছে পুলিশ। গুলি চালানোর ক্ষেত্রে যে বন্দুক ব্যবহার করা হয়েছিল তা কোথা থেকে এসেছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। অন্য দুই অভিযুক্তর খোঁজেও তল্লাশি শুরু হয়েছে।

সেকেন্দারের কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার মানুষ। তাদের অভিযোগ, শাসক দলের ছত্রছায়ায় থাকায় এলাকায় দাদাগিরি চালাতো অভিযুক্ত সেকেন্দার ওরফে সাইন।সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে সেকেন্দারের বিরুদ্ধে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *