আমাদের ভারত, ১ এপ্রিল:
নির্বাচনী বন্ড নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক চলছে। এবার এই ইস্যুতে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীদের উদ্দেশ্যে আক্রমন শানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যারা এই বিষয়টি নিয়ে নাচানাচি করছেন, তাদের আফসোস করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি জানান, কোনও ব্যবস্থাই পুরোপুরি ত্রুটিহীন নয়। তবে সেই সব ব্যবস্থাকেই উন্নত করার সুযোগ থাকে।
রবিবার একটি তামিল সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদী জানান, নির্বাচনী বন্ড বিজেপির জন্য কোনও বিপদ তৈরি করবে না। তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মোদী বলেন, তাহলে বলুন আমরা কী করেছি, যে এটা কে বিপদ হিসেবে দেখব? পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকার নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থা চালু করেছিল বলেই রাজনৈতিক দলগুলিকে কারা অনুদান দিয়েছে এবং কারা সেই অনুদান বা চাঁদা পেয়েছে তা জানা গিয়েছে।
২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে কারা কাকে অনুদান দিত তা জানা যেত না বলে কংগ্রেস এবং বিরোধীদের খোঁচা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বিরোধী দলগুলর অবশ্য দাবি, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে দুর্নীতিকে আইনি রূপ দিয়েছে বিজেপি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বন্ডের তথ্য প্রকাশ্যে আনার পরই দেখা যায়, এই ব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে কেন্দ্রের শাসক দল। বড় বড় কর্পোরেট সংস্থাগুলির অনুদান সবচেয়ে বেশি পেয়েছ বিজেপি। এ বিষয়ে অনেকটা পিছিয়ে বিরোধী দলগুলি।
অর্থের পরিমাণ গোপন রেখে রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হয়েছিল নির্বাচনী বন্ডে। সেই ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিল এসবিআই। কথা ছিল, কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে স্টেট ব্যাংকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অর্থের বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দেবেন। সেই অর্থ ভাঙ্গিয়ে নেবে রাজনৈতিক দলগুলি। মোদী সরকার জানিয়েছিল, মূলত কালো টাকার লেনদেন রুখতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে অসংবিধানিক এবং ক্ষতিকারক বলে আখ্যা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত এসবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিল অবিলম্বে যেনো ওই বন্ড বন্ধ করে তারা। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ দেয়, ২০১৯ এর ২২ এপ্রিল থেকে এখনো পর্যন্ত নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য ৬ মার্চের মধ্যে এস বি আই কে আদালতের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি নিয়ে যেস্যুতে বিরোধীরা বিজেপি সরকারকে নিশানা করছে তার পাল্টায় মোদি বলেন, আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর কি ইডি গঠন করা হয়েছিল? না আমরা কি পিএমএলএ নিয়ে এসেছি? ইডি একটি স্বাধীন সংস্থা এবং স্বাধীনভাবে কাজ করেছে। আমরা তাদের কাজে হতক্ষেপ করি না। ইডিতে প্রায় সাত হাজারটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রাজনীতিবিদদের সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা তিন শতাংশের কম। তিনি বলেন, বর্তমান বিরোধী দল যখন ক্ষমতায় ছিল তখন নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল কম। আমাদের সরকারের আমলে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ওয়াশিং মেশিনের ভেতরে রাখা নগদ টাকা উদ্ধার করা হচ্ছে। টাকা থাকছে জলের পাইপ, বিছানা ইত্যাদিতে। কংগ্রেস সাংসদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাংলার নেতা মন্ত্রীদের কাছ থেকে টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আমার মনে হয় না দেশের মানুষ এসব সহ্য করতে প্রস্তুত।