Watermelon, Bankura, এবার তরমুজের ভালো ফলন বাঁকুড়া জেলায়, খুশি চাষিরা

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৭ এপ্রিল: গরম পড়তেই জেলার বাজারগুলি তরমুজে ছয়লাপ। এবার বাঁকুড়া জেলাতে তরমুজের চাষ ও ফলন বেড়েছে। তাই বাজারে যোগানও বেড়েছে। যার ফলে জেলার বাইরে থেকে তরমুজ আনতে হচ্ছে না। তাই দামও তেমন বাড়েনি। ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে দামের জন্য ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই খুশি।

জেলায় এবার তরমুজের চাষ বেশি হওয়ায় চাষিদের মধ্যে খুশির হাওয়া। সেচের জলের অভাবে জেলার অনেক জায়গাতেই বোরো ধানের চাষ সেভাবে হয় না। তাই বোরোর বিকল্প হিসাবে তরমুজ চাষে ঝুকেছেন চাষিরা। জেলার ডাঙা জমি ও সেচের অভাব থাকা সমতল জমিতে তরমুজের চাষ করা হয়েছে। জেলার শিল্পশহর বড়জোড়া থেকে জঙ্গলমহল প্রায় সর্বত্র একই ছবি। তরমুজ চাষিদের বক্তব্য, এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় ফলন ভাল হয়েছে। তাই মিলছে ভাল দামও। গরমের পাশাপাশি চৈত্র মাসে হিন্দুদের বাসন্তী পুজো, রামনবমী, নীলষষ্টি, নবরাত্রি, চড়ক ও শনি অমাবস্যা এবং রোজা থাকায় তরমুজের ভালো চাহিদা রয়েছে।

জেলায় প্রচুর পরিমাণে সমতল ও অনুর্বর ডাঙা জমি রয়েছে। এসব জমিতে বৃষ্টির জলের ওপর নির্ভর করে চলে ধানচাষ। অনেক জায়গায় জলের অভাবে চাষিরা ধানের চাষও করতে পারেন না। এই অবস্থায় কৃষিদপ্তরের তরফে ধানের বিকল্প হিসাবে তরমুজ চাষের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেলায় গত কয়েক বছর ধরে তরমুজের চাষ হলেও এবার উপযুক্ত পরিবেশ থাকায় ফলন ভালোই হয়েছে।

ফলবিক্রেতা ও চাষিদের বক্তব্য, মাত্র কয়েকবছর আগেও বাইরে থেকে তরমুজ আনতে হতো। এবার জেলাতেই ভালো ফলন হয়েছে। জেলা থেকে স্থানীয় বাজারগুলির পাশাপাশি দুর্গাপুর, টাটা, পুরুলিয়া, আসানসোল, বর্ধমান ও মেদিনীপুরের বাজারগুলিতে তরমুজ রপ্তানি হচ্ছে। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে যে, এ বছর শুধু খাতড়া মহকুমা এলাকাতেই প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। এবার জেলায় কমপক্ষে সাত হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। চৈত্র মাসে শুরু থেকেই জেলার অনেক জমিতেই তরমুজ পেকে ওঠে। তাড়াতাড়ি ওঠায় তরমুজের ব্যাপক চাহিদা ও ভাল দাম ছিল জেলার বাজারগুলিতে। এমনকি ভাল রপ্তানিও হচ্ছে। সোমবার বাঁকুড়া বাজারে তরমুজ নিয়ে আসা রাইপুর ব্লকের চাষি হরিহর দাস ও জয়দেব রায় বললেন, এবার ১৪০০ থেকে ১৭০০ টাকা কুইন্টাল দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। চাষের খরচ বাঁচিয়েও এবার বেশ কিছু টাকা লাভ থাকবে।

বাঁকুড়া, বড়জোড়া ও সোনামুখির তরমুজ বিক্রেতাদের বক্তব্য, এবছর তারা ভালো তরমুজ, গড়ে ১৫ টাকা কিলো দরে কিনতে পারছেন শহরে বসেই। প্রতি কিলো তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। তাছাড়া শহরে বসেই ভালো তরমুজ মেলায় প্রতিদিনের প্রয়োজন মত কিনতে পারছেন। তাজা তরমুজ পাওয়ায় ক্রেতারাও খুশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *