“এই নিয়ম ওঁর ঠাকুরদা- ঠাকুরমা তৈরি করে গেছেন, বিজেপি করেনি,” রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ নিয়ে পাল্টা দিলেন সুকান্ত

আমাদের ভারত, ২৫ মার্চ: মোদী পদবী নিয়ে অপ্রীতিকর মন্তব্যের কারণে গুজরাটের সুরাট আদালত রাহুল গান্ধীকে ২ বছরের সাজা শুনিয়েছিল। যদিও তাঁর সঙ্গে সঙ্গে জামিন হয়ে গেছে। কিন্তু দু’বছর জেল হবার কারণে নিয়ম মেনে তার সাংসদ পদ নিয়ে সাজা ঘোষণার পরের দিনই পদ খারিজ করে দেওয়ার নোটিশ জারি করা হয় সংসদ সচিবালয়ের তরফে। এই ঘটনায় কংগ্রেস সহ সমস্ত বিরোধী দল সরব হয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। তাদের অভিযোগ, পরিকল্পনা করেই রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে। এর জবাব দিতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন যে, নিয়ম মেনে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হয়েছে, সেই নিয়ম রাহুল গান্ধীর ঠাকুমা ঠাকুরদারই তৈরি করা। একই সঙ্গে তিনি, মোদী যারা তেলি অর্থাৎ ওবিসি, সমাজের মানুষ তাদেরকে রাহুল গান্ধীর অপমান করার অধিকার নেই বলেও সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।

সুকান্ত মজুমদার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, রাহুল গান্ধী যে মন্তব্য করেছেন তার বিরুদ্ধে কিছু ব্যক্তি আদালতে গেছেন। আদালত একটা রায় দিয়েছে। নিম্ন আদালতের রায়ের সাথে কেউ সহমত নাও হতে পারেন। তাকে উচ্চ আদালতে যেতে হতে পারে। কিন্তু স্পিকারের কাছে কেউ যদি সাজা প্রাপ্ত আসামি হন সেটা আমি হই বা নরেন্দ্র মোদী হন, সবারই সাংসদ পথ খারিজ হয়ে যাবে। স্পিকারের কাছে আর অন্য কোনো পথ নেই, এটাই নিয়ম।

এরপরই সুকান্ত মজুমদার মনে করিয়ে দেন, “এই নিয়ম আমরা তৈরি করিনি, বিজেপি তৈরি করেনি। তারই ঠাকুরদা- ঠাকুরমা তৈরি করে গেছেন।”
কিন্তু কেনো এতো তাড়াহুড়ো করে সংসদ সচিবালয় তরফে জানিয়ে দেওয়া হল যে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে। যেখানে আদালতের তরফে উচ্চ আদালতে যাওয়ার জন্য ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এখানেই বিরোধীদের অভিযোগ, এটা পরিকল্পনারই অংশ। এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, এটাতে এক্সট্রা কোনো মাইলেজ পাওয়া যাবে তা কিন্তু নয়। উচ্চ আদালত থেকে তিনি যদি রায় নিয়ে আসেন তাহলে তার সদস্য পদ পূর্ননবীকরণ হয়ে যাবে। নিম্ন আদালতের রায় যদি পরিবর্তন হয় তাহলে তিনি আবার নিজের সাংসদ পদ ফেরত পাবেন এটা নিয়ে শুধুই জলঘোলা করা হচ্ছে।

বরং তাড়াতাড়ি রাহুল গান্ধীর উচ্চ আদালতে না যাওয়াকে কংগ্রেসের সহানুভূতি পাওয়ার পরিকল্পনা বলেই মনে করেছেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ওনারা তাড়াতাড়ি উচ্চ আদালতে মামলা করতে পারতেন। কংগ্রেসের তাবড় তাবড় উকিল রয়েছে, কিন্তু সেটা তারা করেননি। পরিকল্পনা করে চুপ করে থেকেছেন। আসলে ওনারা সহানুভূতি আদায় করছেন। কিন্তু সুকান্তর দাবি, সহানুভূতি দিয়ে কখনো প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায় না। তাই কোর্টের রায়কে রাজনৈতিক রায় বললে ভারতের বিচার ব্যবস্থাকে অপমান করা হয়।

অন্যদিকে সুকান্ত মজুমদার অভিযোগের সুরে বলেন, রাহুল গান্ধী সমস্ত তেলি সমাজকে অপমান করেছেন। কিন্তু এই অধিকার রাহুল গান্ধীকে কেউ দেয়নি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “তেলি সমাজের মানুষ, যারা ওবিসি সমাজের মানুষ, যারা পিছিয়ে পড়া সমাজের মানুষ, তাদেরকে অপমান করার অধিকার কি রয়েছে রাহুল গান্ধীর?” সুকান্ত মনে করিয়ে দেন রাহুল গান্ধী দাবি করেছিলেন, তিনি পৈতে ধারী ব্রাহ্মণ। সুকান্ত বলেন, ব্রাহ্মণ হয়ে রাহুল গান্ধীর নিশ্চয়ই অধিকার জন্মায় না ওবিসি সমাজের মানুষকে অপমান করার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *