Governor, Gandhi Jayanti, বাংলায় কাজ নেই খাবার নেই, গান্ধী জয়ন্তীর দিন পরিযায়ী সমস্যা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব রাজ্যপাল

আমাদের ভারত, ২ অক্টোবর: পশ্চিমবঙ্গে অনাহার এবং পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। গান্ধী জয়ন্তীর দিন ব্যারাকপুর গান্ধী ঘাট থেকে এই বিষয়টিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। মহাত্মা গান্ধীর বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে রাজ্যপাল বলেন, একটি সভ্য সমাজে কোনো অনাহার থাকতে পারে না। রাজ্য সরকারকে বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যপাল।

বুধবার ব্যারাকপুরে গান্ধী ঘাটে এসে রাজ্যপাল রাজ্যের কর্মসংস্থান সহ একাধিক ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে নিশানা দাগেন। কাজ নেই, খাবার নেই বাংলায়, বলে মন্তব্য করেন তিনি। রাজ্যপালের কথায় এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক যে বাংলার মাটিতে অনাহার এবং পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনা সামনে আসছে। তিনি বলেন, “জাতীর জনক মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন কোনো সভ্য সমাজে এই অনাহারের ঘটনা থাকতে পারে না। রাজ্য সরকারের এটা দেখা উচিত।” তিনি বলেন, “এই রাজ্য থেকে কেউ যেন না খেয়ে মারা না যায়। এটাই আজ শপথ নেওয়া উচিত।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় বাংলা থেকে চেন্নাই যাওয়া কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিকের অনাহারে থাকার কথা জানতে পারেন রাজ্যপাল। দিল্লিতে ছিলেন তিনি। ১৭ সেপ্টেম্বর দিল্লি থেকে সোজা চেন্নাই যান এবং স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্যে বাংলার শ্রমিকদের থাকা খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু সম্প্রতি আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

রাজ ভবনের মিডিয়া সেলের এক্স হ্যান্ডেলে দাবি করা হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের সবথেকে বড় উৎস বাংলা। ১ অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত ই-ফ্রম পোর্টালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের মোট সংখ্যা ২ কোটি ৬৩ লক্ষ ৭২ হাজার ৯১১। কেন এত মানুষ বাংলা ছাড়ছেন এটাই প্রশ্ন ? অন্যান্য রাজ্যগুলি ভাবছে বাংলার কী হয়েছে? খাদ্য ও জীবিকার অভাবে বাংলা থেকে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন রাজ্যে যাচ্ছেন। রাজভবনের পোস্টে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, এই শ্রমিকরা রাজ্যের বাইরে কাজ করার সময় চরম কষ্ট ও শোষণের মধ্যে পড়ছেন। অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে পড়ছেন। এদিকে একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য বছরের পর বছর বাড়িতে না থাকায় সামাজিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা অমীমাংসিত থেকে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের দ্বারা তৈরি জটিল পরিস্থিতি পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারগুলির জন্য চরম দুর্ভোগ ডেকে আনে।

একদিকে রাজভবনের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে পরিযায়ী সমস্যা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা, অন্যদিকে গান্ধী ঘাটের গান্ধী জয়ন্তীর অনুষ্ঠানেও এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। এর ফলে অনেকেই মনে করছেন রাজ্য ও রাজ্যপালের সংঘাতের তালিকায় আরও একটি নতুন ইস্যু যুক্ত হলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *