আমাদের ভারত, ৬ ডিসেম্বর: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা কার্যত তাদের জীবন মরণের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে জঙ্গি সংগঠন জামাত ইসলামি ও বিএনপি দ্বারা নির্বাচিত বাংলাদেশের তদারকি সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য পাকিস্তান থেকে অস্ত্রশস্ত্র কিনতে শুরু করেছে। অন্যদিকে জামাত ইসলামি ও বিএনপি জঙ্গিরা প্রতিদিন নিয়ম করে দেশের কোনো না কোন হিন্দু এলাকায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
মৌলবাদীরা হিন্দুদের নিত্যদিন মারধর করছে, ঘরবাড়ি ভাঙ্গছে, দোকান- পাট লুঠ করছে, আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। আবার আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করার জন্য লাগাতার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের মুসলিমদের বিক্ষোভের নতুন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওতে “নাড়ায়ের তাকদির, আল্লাহু আকবার” স্লোগানের পাশাপাশি “একে একে হিন্দু ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর” স্লোগান দিতে শোনা গেছে বাংলাদেশি মুসলিমদের। যদিও ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি আমাদের ভারত।
ভিডিওটি নিজের এক্স হ্যান্ডেল শেয়ার করেছেন একটি পত্রিকার সম্পাদক সালহা উদ্দিন সৈয়দ চৌধুরী। প্রতিক্রিয়ায় তিনি লিখেছেন, সন্ত্রাস সতর্কতা। বাংলাদেশে আগে ইসলামপন্থী এবং জিহাদিরা ইসকনের সাধুদের হত্যার স্লোগান দিত। এখন তারা হিন্দুদের হত্যার আহ্বান জানাচ্ছে। এটা ঠিক তখনই ঘটে যখন ইসলামপন্থী এবং জিহাদিরা ক্ষমতা দখল করতে সফল হয়।
এই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় ন্যাশনাল কান্ট্রি কালচার সিভিলাইজেশন নামে একজন এক্স হ্যান্ডেল ব্যবহারকারী লিখেছেন, প্রকৃতপক্ষে ইসকন ছিল একটা অজুহাত। হিন্দু সমাজবাদের লক্ষ্য ছিল এবং থাকবে। একবার বাংলাদেশের হিন্দুদের জব্দ করা হলেই পূর্ব পাকিস্তানের জঙ্গিরা তাদের দৃষ্টি ভারতের হিন্দুদের দিকে ঘুরিয়ে দেবে। যেখানে তারা তাদের সহ ধর্মালম্বীদের কাছ থেকে সহজে সাহায্য পাবে।
পবিত্র মোহন বলেছেন, আমাদের অন্তরের চেতনা একদিন আমাদের সেনাবাহিনী প্রবেশ করবে এবং হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের স্বাধীনতা দেবে। পাপের ঘরা ভরে গেছে সত্যের জয় হবে।
আর এন সত্যনারায়ণ রায়ের প্রতিক্রিয়া, শুধু হিন্দু নয়, তারা ঘৃণা করে ইহুদী-খ্রিস্টান- জৈন সহ অন্য সম্প্রদায়কেও। তারা নারী- সঙ্গীত- স্থাপত্য- চিকিৎসা- শিক্ষা- মোবাইল কিছুই পছন্দ করে না। তারা শুধু মাদ্রাসা পছন্দ করে। যেখানে মগজ ধোলাই করে সন্ত্রাসী তৈরি করা হয়।
জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা থেকে বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে মুসলিম হামলাকারীদের দ্বারা মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার হয়েছে হিন্দুরা। অন্তত ১৩০টি হিন্দুর বাড়িঘর, দোকান ভেঙ্গে দিয়েছে। ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে কুড়িটি মন্দির। মুসলিমদের সঙ্গে হামলায় অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশের পুলিশ ও সেনাও বলে অভিযোগ। কোনো হিন্দু যাতে হামলা বা ক্ষয়ক্ষতির ভিডিও, ছবি পোস্ট করতে না পারে তার জন্য বেছে বেছে হিন্দুদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোবিন্দ দাস নামের এক ব্যক্তি হিন্দুদের বাড়ি ঘর ভাঙ্গচুরের ভিডিও রেকর্ড করলে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বিপ্র এবং সবুজ নামের দুই হিন্দু ব্যক্তি মোটর বাইকে করে ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গেলে তাদেরও সেনাবাহিনী আটক করে। সবুজ দমকল বাহিনীতে কর্মরত থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়, কিন্তু বিপ্লবকে আটক করে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের একটি মিডিয়া সূত্রে খবর, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে পরিস্থিতি উদ্বেগ জনক। এলাকাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা নির্যাতনের ঘটনা যাতে প্রকাশ না পায়, তার জন্য বাইরের কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না এবং স্থানীয়দের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। স্কুল শিক্ষক থেকে অন্য পেশার মানুষ সকলকেই নজরবন্দি করা হয়েছে।