আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বীরভূম, ৮ জানুয়ারি: ভগ্নপ্রায় শিব মন্দির পুননির্মাণ করলেন গ্রামবাসীরা। সোমবার মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থেকে কলস করে গঙ্গার জল নিয়ে এসে গ্রাম প্রদক্ষিণ করে নতুন মন্দিরে শিবের অভিষেক করা হয়।
জানা গিয়েছে, প্রায় সাতশো বছরের প্রাচীন বীরভূমের পাইকর বুড়ো শিব মন্দির। এক সময় এলাকার জমিদার এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর গ্রামের পান্ডারাই মন্দিরের দেখভাল করে আসছিলেন। এক সময় মন্দিরটি মাটি ছিল। কালের নিয়মে সেই মন্দির ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পরিণত হয়। একশো বছর আগে বিহারের সিঙ্ঘম জেলার প্রখর সিং-এর ছেলে বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়। সেই সময় পাইকর গ্রামে হৃষিকেশ পাণ্ডা নামে এক আয়ুর্বেদ চিকিৎসক ছিলেন। তিনিই প্রখর সিংহের ছেলের প্রাণ ফিরিয়ে দেন। ছেলের প্রাণ ফিরে পাওয়ায় হৃষিকেশ পাণ্ডার নির্দেশে মাটির শিব মন্দির ভেঙ্গে কংক্রিটের মন্দির গড়ে দেন। শতাব্দী প্রাচীন সেই কংক্রিটের মন্দির ফের ভেঙ্গে পড়ে। ফলে খোলা আকাশের নিচে থেকে নষ্ট হচ্ছিল বুড়ো শিবের মূর্তি। এরপরেই স্থানীয় বাসিন্দা এবং পান্ডারা মন্দির সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন মন্দিরে শিবের অভিষেক করা হল এদিন। ভোরের দিকে মহিলারা গঙ্গা থেকে জল নিয়ে এসে শঙ্খধ্বনি সহকারে গ্রাম প্রদক্ষিণ করে। এরপর তারাপীঠের সাত তান্ত্রিককে দিয়ে তন্ত্রমতে শিব মন্দিরে ভোলেবাবার অভিষেক করা হল। সারাদিন ধরে চলে পুজোপাঠ। রাতে কয়েক হাজার মানুষকে পঙ্কতিভোজে আপ্যায়িত করা হয়।
গ্রামের বাসিন্দা সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়, গৌতম দত্ত, সুশোভন দত্ত, অমিত দত্তরা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরটি ভাঙ্গা অবস্থায় ছিল। বৃষ্টিতে শিবের মূর্তি ভিজত। কার্যত অবহেলায় পড়েছিল বুড়ো শিব। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে সকলের আর্থিক সাহায্য নিয়ে মন্দির গড়ে তুলেছি। শেষ পর্যন্ত নতুন মন্দির শিবের অভিষেক করতে পেরে ভালো লাগছে”।