শিলান্যাসের পর ৩ বছরেও তৈরি হয়নি রাস্তা, তপনে মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার খাসতালুকে অনুন্নয়নের জিগির তুলে ভোট বয়কটের ডাক

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৫ জানুয়ারি: বোর্ড ঝুলছেই, তিন বছরেও তৈরি হয়নি রাস্তা। শিলান্যাসের পর থেকেই একপ্রকার বেপাত্তা ঠিকাদার সংস্থা। ফিতে কেটে এলাকা ছেড়েছেন খোদ প্রতিমন্ত্রীও। রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নিতে গত তিন বছরেও এলাকায় দেখা মেলেনি তাঁর। খোদ রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার খাস তালুকেই ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামের বাসিন্দারা। অনুন্নয়নের জিগির তুলে বিধানসভা ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছে নয়টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের হজরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ময়রাকুড়ি গ্রামের এমন ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়েছে। গঙ্গারামপুর বিধানসভার অন্তর্গত ওই গ্রামের রাস্তা তৈরীর বিষয়ে কোনও হেলদোল দেখাননি স্থানীয় বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌতম দাস বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

হজরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাঘবপুর গম্ভীরাতলা থেকে হজরতপুর মাসনাতলা পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তার উপর নির্ভরশীল আশপাশের প্রায় ৯ থেকে ১০টি গ্রাম। রাঘবপুর, ময়রাকুড়ি, ভুঁইমালী পাড়া, শোলাকুড়ি সহ অন্যান্য গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দারা প্রতিদিন ওই রাস্তা দিয়েই চলাচল করেন। বর্ষায় বাসিন্দাদের অসুবিধা দূর করতে ২০১৭ সালে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর থেকে প্রায় ১ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। যার পরে খোদ এলাকার মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা শিলান্যাস অনুষ্ঠান করে খুব দ্রুত রাস্তা চালু করার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। অভিযোগ, পুরনো ওই রাস্তার ঢালাই ও ইট তুলে মাটি ফেলার পর থেকেই আচমকা বেপাত্তা হয়ে যায় কাজে নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা। ঘটনা নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসন বিধায়ক থেকে মন্ত্রী এমনকি নবান্নে জানিয়েও কোনও ফল পাননি বাসিন্দারা। এখানেই শেষ নয়, আরটিআই করেও কোন সদুত্তর পাননি গ্রামের এক বাসিন্দা। প্রাথমিক স্কুল থেকে অঙ্গনওয়ারি সেন্টার, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বাজার ঘাট সব ক্ষেত্রেই যাবার পথে গ্রামবাসীদের বাধা হয়ে দাঁড়ায় ওই বেহাল রাস্তা। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিবছর বর্ষার সময় ছাত্রছাত্রী থেকে গর্ভবতী মহিলা, অসুস্থ রোগী, সকলকেই চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় প্রতিনিয়ত। বছরের পর বছর এমন সমস্যায় জেরবার হয়েই অনুন্নয়নের জিগির তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। ডাক দেওয়া হয় ভোট বয়কটের।

গ্রামের বাসিন্দা আমিনুর মিয়াঁ, ফিরোজ মিয়াঁ ও কায়সার আলী সরকাররা জানিয়েছেন, এক রাস্তা ৩ বছরেও করতে পারেনি তাদের নেতা মন্ত্রী। প্রশাসন কোনও কাজের নয়। মন্ত্রী জানিয়েছে, ২০২১ এর পরে রাস্তা তৈরি হবে। বাধ্য হয়ে তারা সকলেই আগামী নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাস্তা না হওয়া পর্যন্ত ভোট দেবেন না তারা।

যদিও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা জানিয়েছেন, ঠিকাদার সংস্থার সাথে গ্রামবাসীদের সম্পর্ক ভালো না হওয়ায় তারা কাজ ছেড়ে চলে গেছে। ইতিমধ্যে কাজের ৩০ শতাংশ টাকা তুলেও নিয়েছে ওই ঠিকাদার সংস্থা। এখন আর কোনও উপায় নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *