জাকির নায়েককে ওমান থেকে ভারতে উড়িয়ে আনার তোড়জোড় শুরু

আমাদের ভারত, ২১ মার্চ: গোয়েন্দা দপ্তর সূত্রে খবর, মৌলবাদী প্রচারক জাকির নায়েককে ওমান থেকে ভারতে উড়িয়ে আনা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে ওমানের প্রশাসনের সঙ্গে এই মর্মে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে খবর।

স্থানীয় আইন মেনে জাকির নায়েককে গ্রেপ্তার করতে ওমানের এজেন্সিগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ভারতীয় দূতাবাস। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ওমানের একাধিক এজেন্সি ভারতীয় দূতাবাসের অভিযোগ মেনে নিয়েছে। তারা জাকির নায়েককে গ্রেফতার করতে পারে। জাকির নায়েককে গ্রেপ্তার করার পরে ওমানে তদন্তকারী দল পাঠাবেন ভারতীয় এজেন্সি। এরই মধ্যে ওমানে রাষ্ট্রদূতের কাছে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

আগামী ২৩ মার্চ জাকির নায়েককে ওমানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দুটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে তার। ওমানের ওয়াকফ বোর্ড এবং ধর্মীয় বিষয়ক মন্ত্রকের তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মৌলবাদী প্রচারক জাকির নায়েককে। তিনি আগামী ২৩ মার্চ সেখানে প্রথমে ভাষণ দেবেন। কেন কোরান গোটা দেশে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তা নিয়ে বক্তব্য রাখবেন তিনি। পরবর্তী ভাষণ দেবেন ওমানের কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। বক্তব্যের বিষয়, মানব সমাজের দয়ালু ব্যক্তিত্ব হজরত মহম্মদ। এই ভাষণটি হবে আগামী ২৫ শে মার্চ।

২০১৬ সালের শেষের দিকে জাকির নায়েকের সংগঠন ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার। হিংসা ছড়ানো, বন্দি করে রাখা, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর মতো অভিযোগ আনা হয়েছিল জাকির নায়েক এবং তার সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধে। ভারত থেকে পালিয়ে যান জাকির নায়েক থাইল্যান্ড মালয়েশিয়াতে। এরপর মালয়েশিয়াতেও দেশের আইন ভঙ্গ করার অভিযোগ ওঠে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে। তবে ততদিনে সে দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে ফেলেন ওই ধর্মীয় প্রচারক।

২০২২ সালের মার্চ মাসের সন্ত্রাসবাদীদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে ভাষণ দিতে শোনা যায় জাকির নায়েককে। তারপর থেকে নায়েকের সংগঠন ইন্ডিয়ান রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সমস্ত কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করা হয়। ব্রিটেনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন জাকির নায়েককে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। সে সময় তার বিরুদ্ধে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী ওসামা বিন লাদেনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করার অভিযোগ ছিল। পাশাপাশি জাকির নায়েক বলেছিলেন, সব মুসলিমের জঙ্গি হওয়া উচিত।

ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জাকির নায়েক সম্পর্কে যে নোটিশ জারি করেছিল তাতে উল্লেখ করা ছিল একাধিক সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মদতের কথা। মুসলিম ধর্মে দীক্ষিত করে তোলা আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা সাম্প্রদায়িক উস্কানি মূলকমন্তব্য করা সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে জাকিরের বিরুদ্ধে।হিন্দু দেবদেবী এবং ধর্মের বিরুদ্ধে একাধিকবার বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করতে শোনা গেছে তাকে। নানা ভাবে ভারতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাতে উস্কানি দেওয়া হচ্ছিল জাকির এবং তার সংগঠনের পক্ষ থেকে বলে জানিয়েছিল ভারত সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *