আমাদের ভারত, ২১ মার্চ: তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতিকে রোমহর্ষক ওয়েব সিরিজের এপিসোডের সঙ্গে তুলনা করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, নিয়োগ দুর্নীতিতে অয়ন শিল যে নয়া নাম উঠে এসেছে তার সাথে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চ্যাট হয়েছে এবং অর্থের বিনিময়ও হয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির সাথে রাজ্যের প্রায় ৬০টি পৌরসভাতেও নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। এই দুর্নীতিতেও তৃণমূল কংগ্রেস জড়িয়ে। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি রোমহর্ষক একটি ওয়েব সিরিজের আলাদা আলাদা এপিসোডের মতো। সিরিজের এপিসোড যেমন নতুন নতুন চমক নিয়ে আসে, সেরকম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় হওয়া এই দুর্নীতিরও তদন্তে প্রত্যেক এপিসোডে নতুন নতুন নাম সামনে আসছে। তিনি বলেন, “এতদিন আমরা কুন্তল তার সঙ্গে শান্তুনুর নাম পেয়েছি। এখন আর একটি নতুন ঐ নাম পেয়েছি অয়ন শীল।” তিনি আরও বলেন, যখনই দুর্নীতির তদন্তে নতুন কোনো নাম আসে তখনই তার সঙ্গে রহস্যময়ী কোনো নারী কোথা থেকে চলে আসে। এক্ষেত্রেও নতুন এপিসোডে নায়কের সাথে নায়িকা হাজির। শ্বেতা চক্রবর্তী নামে একজনের নাম পাওয়া যাচ্ছে।
সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ করে বলেন, “রণে বনে জলে জঙ্গলে তৃণমূল সব জায়গায় দুর্নীতি করেছে। শুধু শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নয়, ৬০টি পৌরসভাতেও নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে এবং তাতে বিভিন্ন নাম এবং নামের তালিকা আমরা পেয়েছি। যে তালিকা পাওয়া যাচ্ছে তাতে নগদ লেনদেনের কথা উঠে এসেছে। সেখানে কানুদা, লাল, এমডি বিভিন্ন এজেন্টের নাম জানাগেছে। কানুদা ৯৬ জনকে চাকরি দিয়েছে, লাল ৬৮ জনকে চাকরি দিয়েছে, এমডি ৪৩ জনকে চাকরি দিয়েছে, তপনদা ১৫ জনকে। ”
সুকান্ত মজুমদার জানান, বরানগর, কামারহাটি, পানিহাটি, উত্তর দমদমের মতো ৬০টি পৌরসভার নাম তারা পেয়েছেন যেখানে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে দেখে বোঝা যাচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস সেখানে চাকরি বিক্রি করেছে।
নিয়োগ দুর্নীতির টাকা টলিউডে ব্যবহার হয়েছে। এই অভিযোগ এখন উঠে আসছে। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, এই মুহূর্তে টলিউড নিয়ন্ত্রণ করেন তৃণমূলের একজন বিধায়ক এবং তার ভাই। তারাই ঠিক করেন কে হিরো হবে কে হিরো হবে না। কতজন কলাকুলশিকে নিতে হবে। তারাই বেঁধে দেবে কতজনকে কলাকুশলী করা হবে ২০, ৩০ না ৪০। তার কথায় তৃণমূল ও টলিউড কামিনী কাঞ্চনের জুড়ি। স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে টালিগঞ্জের নাম জড়িয়েছে বলে দাবি বিজেপি রাজ্য সভাপতির।
একই সঙ্গে সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, অয়ন শীলের সঙ্গে ভাইপোর চ্যাটও হয়েছে এবং আর্থিক ট্রানজাকশন হয়েছে। অয়ন শীলের অ্যাকাউন্ট থেকে ভাইপোর অ্যাকাউন্টে টাকা গেছে বলে খবর পেয়েছেন তিনি বলেও দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
অন্যদিকে, মনরেগা ও আবাস দুর্নীতির ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বিজেপি আদালতের দ্বারস্থ হবে বলেও জানান সুকান্ত মজুমদার। একই সঙ্গে তিনি কেন্দ্রের আরবান ডেভেলপমেন্ট মিনিস্টারের কাছে চিঠি দিতে চলেছেন বলেও জানান। তিনি বলেন, কেন্দ্র সরকার পৌরসভাকে যে টাকা পাঠায় সে টাকা অপব্যবহার হয়েছে কিনা, নয় ছয় হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখতে প্রতিনিধি দল পাঠানোর অনুরোধ করে চিঠি দেবেন বলেও জানান তিনি।