আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ১৮ ফেব্রুয়ারি: পুরভোটের আগে বালুরঘাটে সামনে এল হাউজ ফর অল নিয়ে শাসকদলের লাগামহীন দুর্নীতি। তালিকায় বেছে বেছে তৃণমূল নেতাদের নাম। ভোট বাক্সেই জবাব দেবেন বললেন বাসিন্দারা। পুরসভা ভোটের আগে হাউজ ফর অল প্রকল্পে শাসকদলের এমন লাগামছাড়া দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের ঘটনায় শোরগোল। বেকায়দায় তৃণমূল শিবির। শহরের গরীব মানুষদের বঞ্চিত করে সরকারি ঘর নিয়ে হরির লুটের অভিযোগ তৃণমূল নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে। খোদ বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নিজের মা ও স্বামীকে ঘর পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। শুধু তাই নয়, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের একঝাঁক তৃণমূল নেতানেত্রীও পেয়েছে সরকারি সেই ঘর বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার এমন সব বিষয় জানিয়ে বালুরঘাট সদর মহকুমাশাসকের কাছে ৬ তৃণমূল নেতানেত্রীর নামে লিখিত অভিযোগ করেছে টাউন বিজেপি। ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক বিশ্বরঞ্জন মুখার্জি। তিনি আরো জানিয়েছেন, দোতালা ঘর থাকলে কখনই এই সরকারি প্রকল্পের ঘর পাওয়া সম্ভব নয়।
আগামী ২৬ এপ্রিল রাজ্যের ১০০টি পুরসভার সাথে নির্বাচন হতে চলেছে বালুরঘাট পৌরসভারও। যার আগে শহরে গরীব মানুষদের মুখ মুছে নেতারা ব্যস্ত সরকারি প্রকল্পের ঘর নিতে। অভিযোগ, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান বেবী বর্মন ওই ওয়ার্ড থেকেই তাঁর মা’র নামে একটি ঘর নিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁর স্বামী সৌভিক দাস মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা হলেও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে বরাদ্দ করে তাঁর নামে একটি ঘর দেওয়া হয়েছে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তাঁর স্বামীকে পুরসভায় অস্থায়ী পদে চাকরি দেবার অভিযোগ নিয়েও কিছুটা বিতর্কে জড়িয়েছিলেন প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান বেবি বর্মন। এমন ঘটনায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন এলাকার মানুষজন। তৃণমূল নেতাদের তোলাবাজির টাকা দিতে না পারায় মেলেনি ঘর বলে অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। এমন বঞ্চনার জবাব তারা ভোট বাক্সেই দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
সূত্রের খবর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের চেয়ারম্যান পুলক রঞ্জন গোস্বামীর ছেলে প্রীতম গোস্বামী ১৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে একটি ঘর পেয়েছেন। ওয়ার্ড সভাপতি অধীর শীলও পেয়েছেন হাউজ ফর অল প্রকল্পের ঘর। অন্যদিকে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের অপর তৃণমূল নেতা তথা বুথ সভাপতি তিনকড়ি অধিকারীর ছেলেও পেয়েছেন সরকারি ঘর। বাদ যায়নি দোতালা ঘর থাকা তৃণমূলের মহিলা নেত্রী শীলা ঘোষও। শহরে শাসক দলের এমন সব দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেই মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন টাউন বিজেপি নেতৃত্ব।
এলাকার বাসিন্দা অপূর্ব সরকার, দিলীপ দত্ত, মলয় দাসরা জানিয়েছেন, তাঁদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গেচুরে যাচ্ছে। আবেদন করেও তাঁরা সরকারি ঘর পাননি। কেননা তৃণমূল নেতাদের দাবি মতো তোলাবাজির টাকা দিতে পারেননি তাঁরা। ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
তৃণমূল নেত্রী শিলা ঘোষ জানিয়েছেন, ঘর পাওয়ার তালিকায় নাম উঠেছে। কবে শুরু হবে তা জানতেই পুরসভায় এসেছিলেন।
অভিযুক্ত বেবি বর্মন বলেন, অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাঁর মা বলে কি সরকারি সুবিধা পাবে না।
টাউন তৃণমূল সভাপতি সুভাষ চাকী জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট শর্ত পূর্ণ করলেই ঘর সকলেই পেতে পারে।
বিজেপির বালুরঘাট টাউন মন্ডল সভাপতি সুমন বর্মন বলেন, হাউজ ফর অল প্রকল্পে চরম দুর্নীতি হয়েছে। স্বজন পোষণ করে শাসক দলের নেতানেত্রীরা সাধারণ গরীব মানুষদের বঞ্চিত করছেন।