শপিং মলে বাঙালি গ্রাহক নিগ্রহের অভিযোগ, ‘ঐক্য বাংলা’র প্রতিবাদে ক্ষমা চাইলেন মলকর্তা

চিন্ময় ভট্টাচার্য
আমাদের ভারত, ১৮ ফেব্রুয়ারি: বাঙালির হৃত সম্মান পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে দিনকয়েক আগেই জন্ম নিয়েছিল ‘ঐক্য বাংলা’ সংগঠন। জন্মের মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই প্রতিবাদের পথে তারা বড় সাফল্য পেল। কলকাতার এক নামজাদা শপিং মলে হিন্দিভাষী কর্মীদের হাতে এক বাঙালি সংগীতশিল্পীর নিগ্রহের প্রতিবাদে সরব হল এই বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন। আর, রীতিমতো ক্ষমা চাইতে বাধ্য করল শপিং মল কর্তৃপক্ষকে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি। কলকাতার ‘অ্যাক্রপলিস মল’-এ হিন্দিভাষী কর্মচারীদের দ্বারা অপমাণ এবং পরবর্তীতে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হন বলে ওই দিন রাতে ফেসবুক লাইভ ভিডিওয় অভিযোগ করেন মুর্শিদাবাদের সংগীতশিল্পী সৌম্যদীপ সিকদার। তাঁর অভিযোগ, মলের ফুডকোর্টে মোবাইল ফোনের জন্য মলকর্মীর কাছে একটি চার্জিং পয়েন্টের খোঁজ করেছিলেন। জবাবে, ওই মলকর্মী তাঁকে হিন্দিতে তুই-তোকারি সম্বোধন করেন। সৌম্যদীপ প্রতিবাদ জানালে বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়। পরবর্তীতে মলের নিরাপত্তাকর্মীদের ডেকে তাঁকে রীতিমতো শারীরিক নিগ্রহ করা হয় বলেও সৌম্যদীপ তাঁর লাইভ ভিডিওয় অভিযোগ করেন। পাশাপাশি, রবিবার রাতেই কসবা থানায় একটি ডায়েরিও তিনি করেন। 

ঘটনার কথা জানতে পেরে বাঙালি আবেগের কারণে এগিয়ে আসে ‘ঐক্য বাংলা’। এই সংগঠনের প্রতিনিধিরা, গতকাল (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অ্যাক্রপলিস মলে যান। মল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ এবং দাবি জানানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, শপিং মল কর্তৃপক্ষ সেই দাবিপত্র গ্রহণ করতে চাননি। কিন্তু, তাতেও দমেননি ‘ঐক্য বাংলা’র সদস্যরা। তাঁরা আজ ফের ওই মলে যান। দাবি করেন, লিখিতভাবে বা ভিডিওর মাধ্যমে বাঙালি গ্রাহক সৌম্যদীপের কাছে হেনস্তার জন্য শপিং মল কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাইতে হবে। পাশাপাশি, সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে তদন্ত করে শপিং মলের দোষী হিন্দিভাষী কর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

কিন্তু, ‘ঐক্য বাংলা’ সংগঠনের অভিযোগ, মল কর্তৃপক্ষ এদিনও প্রথমে তাঁদের দাবি মানতে চাননি। পরে, দাবিপত্র জমা নিলেও ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করেন। এই পরিস্থিতিতে ওই শপিং মলে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন ‘ঐক্য বাংলা’র প্রতিনিধিরা। বেকায়দায় পড়ে, ই-মেল মারফত সৌম্যদীপ এবং ‘ঐক্য বাংলা’র কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন মল কর্তৃপক্ষ। 

ঐক্য বাংলার নেত্রী সুলগ্না দাশগুপ্ত এই ক্ষমা চাওয়াকে ‘বাঙালির জয়’ বলে জানিয়েছেন। তিনি জানান, ওই দোষী হিন্দিভাষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না-হওয়া পর্যন্ত তাঁদের লড়াই চলবে। ‘ঐক্য বাংলা’কে তাঁর মতো এক সাধারণ বাঙালির লড়াইয়ে পাশে পেয়ে খুশি আক্রান্ত সংগীতশিল্পী সৌম্যদীপও। তিনি গোটা ঘটনায়, ‘ঐক্য বাংলা’কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *